মিজোরামে বাংলার শ্রমিকদের মৃত্যুতে তরজা শুরু শাসক-বিরোধীর

মিজোরামে বাংলার শ্রমিকদের মৃত্য়ুকে সামনে রেখে নতুন করে এক পরিযায়ী-তরজা শুরু শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে। বুধবার সকালে বীভৎস দুর্ঘটনা ঘটে মিজোরামে। এক নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ ভেঙে বহু মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্ঘটনায় ১৭ জনের প্রাণ গিয়েছে। এরপর বুধবার বিকালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘মিজোরামে রেল ব্রিজ করতে গিয়ে ৩৫ জন মানুষ মারা গেলেন। তার মধ্যে বাংলার ২৪ জন। তাঁদের বেশিরভাগই মালদহ জেলার।’ যদিও এখনও মিজো-সরকারের তরফ থেকে সরকারিভাবে মোট মৃতের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়নি। তবে এ নিয়ে বাংলায় রাজনৈতিক তরজা চরমে ওঠে বৃহস্পতিবার সকালে।

আর লোসকভা নির্বাচনের আগেই এই ইস্যুকেই কাজে লাগাতে চাইছে স্যাফ্রন ব্রিগেড। এরপরই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই মালদহের বাসিন্দা। বাংলার কাজের সুযোগ কম থাকার কারণে এখানকার মানুষকে বাইরে কাজে যেতে হচ্ছে। মিডলম্যানদের মাধ্যমে ন্যূনতম পারিশ্রমিকে কাজে যান তাঁরা। বাড়ির কাছে কাজ দিতে পারে না বাংলার সরকার। আর সে কারণেই বাড়ি থেকে বহু দূরে গিয়ে কাজ করতে হয় তাঁদের।’প্রত্যুত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সামনে আনেন ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র থেকে না দেওয়ার প্রসঙ্গ। তুলে ধরেন, কোভিডকালে গোটা দেশ পরিযায়ী শ্রমিকদের যে ভয়াবহ চিত্র দেখেছে সেই ছবি।

নারী শিশু ও সমাজ কল্যাণ, শিল্প মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। সেসব কথা অসত্য, অসম্পূর্ণ কথা। ২০২০ সালে কোভিডের সময় পায়ে হেঁটে শ্রমিকরা যখন বাড়ি ফিরছেন, তখন ওনাদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে বলেছিলেন, ওনাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র রাজ্য যারা মনরেগার জন্য টাকা পাবে না। অনেক শ্রমিক কিন্তু এই মনরেগার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আপনারাই তো বাধ্য করছেন ওনাদের পরিযায়ী হওয়ার জন্য। ২০২১ সাল থেকে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ।’

একইসঙ্গে বিরোধী দলনেতার কাছে শশী পাঁজা প্রশ্ন করেন, ‘দেশের বহু রাজ্যের মানুষ এ দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। কর্মসংস্থান খুঁজতে দেশ ছাড়ছেন তাঁরা। এর উত্তর কি বিরোধী দলনেতার কাছে আছে?’

এদিকেএদিন বিধানসভার অন্দরেও মিজোরামের ঘটনাকে সামনে রেখে উত্তাল হয় অধিবেশন। অধিবেশনের উল্লেখ পর্বে বিজেপির হবিবপুরের বিধায়ক জুয়েল মুর্মু এ বিষয় উত্থাপন করেন, ‘মালদহের ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক মিজোরামে মারা গিয়েছেন। এটা দুঃখের বিষয়। আমাদের রাজ্যের এক একটা গ্রাম থেকে ২০০-৩০০ মানুষ কাজে যাচ্ছেন অন্য রাজ্যে। কাজ না পেয়ে বাইরে যাচ্ছেন। আর এই ঘটনা ঘটছে। এটা দুঃখজনক। পরিবার চালানোর জন্য আমাদের ভিন রাজ্যে যেতে হচ্ছে। ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ ভিনরাজ্যে আছেন। এখানে কোনও কারখানা নেই। যারা শহিদ হলেন, তাঁদের অনুদান দেওয়া হোক।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 5 =