র্যাগিং ঠেকাতে, র্যাগারদের রুখতে র্যাগিংয়ে নিহত ছাত্রের নামে অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত হলো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে,অন্তত এমনটাই জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ভিসি ভাস্কর গুপ্ত। এই প্রসঙ্গে যাদবপুরের ভারপ্রাপ্ত ভিসি এও জানান, ইসি’তে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এরপরই ইসি’র সব সদস্য সহমত পোষণ করেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, র্যাগিং ঠেকাতে যে পড়ুয়া উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবেন, তাঁকে র্যাগিংয়ে নিহত ছাত্রের নামাঙ্কিত পুরস্কারে ভূষিত করা হবে প্রতি বছর।
যদিও র্যাগিংয়ের জেরে মৃত ওই ছাত্রের পরিবার মনে করছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাঁদের হাতে ‘লজেন্স’-এর মতোই য়েন কিছু একটা তুলে দিচ্ছেন। এই প্রেক্ষিতে মৃতত ছাত্রের পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়, অ্যাওয়ার্ড চালুর বদলে সন্তানের নামে স্মৃতিসৌধ তৈরি এবং তাঁর মৃত্যুদিনটিকে অ্যান্টি র্যাগিং দিবস হিসেবে পালনের।
এর পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির যে বৈঠক ছিল তাতে গত অগাস্টে যাদবপুরের মেন হস্টেলে র্যাগিং ও যৌন হেনস্থায় ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত পড়ুয়াদের শাস্তি নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ। ওই বৈঠকেই মৃত ছাত্রের স্মৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কী করতে পারে, তা নিয়ে একাধিক প্রস্তাব আসে। কেউ প্রস্তাব দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ভবনের নাম মৃত ছাত্রের নামে রাখা হোক, কেউ প্রস্তাব দিয়েছেন, হস্টেল বা ক্যাম্পাসে স্মৃতিসৌধ বানানো যেতে পারে, কারও কারও প্রস্তাব ছিল, মেন হস্টেলের নাম বদলে ওই ছাত্রের নামে রাখা হোক। কিন্তু এই প্রস্তাবগুলি নিয়ে কর্মসমিতির অনেকেই মনে করেন, এমন কিছু করা ঠিক হবে না যা বার বার যাদবপুরের ওই অন্ধকারময় স্মৃতি উসকে দেয়। ভিসি প্রস্তাব দেন, র্যাগিং ঠেকাতে যে ছাত্র বা ছাত্রী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবেন, তাঁকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হোক মৃত ছাত্রের স্মৃতিতে। সেই প্রস্তাবেই সিলমোহর পড়ে।
এর পাশাপাশি যাদবপুরের ভিসি এও জানান, ‘এই ঘটনায় যাদবপুরের মাথা হেঁট হয়েছে। আমরা দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করেছি, আর বার্তা দিতে চাইছি, যাদবপুর র্যাগিংয়ের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলবে। যে পড়ুয়ার প্রাণ গিয়েছে, সে আমাদের মনে সারাজীবন থাকবে। এমন ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সে কারণেই তাঁর স্মৃতিতে আমরা একটি অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ কী ভাবে, কোন কোন ক্রাইটেরিয়া মেনে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে, তা অবশ্য ঠিক হবে পরে। ক্যাম্পাসে র্যাগিংয়ে নজরদারিতে ইসি’তে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বর্ষ-ভিত্তিক আলাদা আলাদা হস্টেল থাকবে। পাশাপাশি ঠিক হয়েছে, হস্টেল সুপার-ওয়ার্ডেনরা ছাড়াও শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হবে নজরদারিতে। তাঁদের কো-সুপার বা ওয়ার্ডেনের দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অ্যাওয়ার্ডের বিষয়টি মৃত ওই ছাত্রের পরিবারকে জানানো হয়েছে। যদিও তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি।