নতুন বছরের প্রথম দিনে ভক্তদের ঢল নামে জগন্নাথদেবের পুরীর মন্দিরে। তবে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল ডের্স কোডের কথা। আর বছরের প্রথম দিন থেকে ঘোষিত এই ড্রেস কোড মেনে চললে জগন্নাথ দেব দর্শন করতে পারছেন পুণ্যার্থীরা। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে পান-গুটখা মুখে পুড়লে কোনও ভক্তকেই আর প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না মন্দিরে। এরই পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বছরের প্রথম দিন বিশেষ ব্যবস্থাও করে জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ।
নয়া নিয়ম অনুযায়ী, তথাকথিত ‘অশালীন’ পোশাক পরিহিত কোনও ভক্তকেই জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। শরীরের সমস্ত অংশ ঢাকা পোশাক পরলে তবেই একমাত্র পুজো দেওয়ার সুযোগ মেলে পুরীর মন্দিরে। হাফ প্যান্ট পরে আসা কোনও পুণ্যার্থীকে এদিন মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। মহিলা পুণ্যার্থীদের ক্ষেত্রে একমাত্র শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ফুল প্যান্ট, শার্ট কিংবা কুর্তা-পাজামা ‘শালীন’ পোশাক হিসেবে চিহ্নিত করা হয় মন্দির কমিটির তরফে। ১২ বছরের নিচের শিশুদের জন্য অবশ্য হাফ প্যান্টে ছাড় রয়েছে। ছেঁড়া-ফাটা জিন্স, শর্ট স্কার্ট, স্লিভলেস পোশাক নৈব নৈব চ। গর্ভগৃহে প্রবেশের আগে লাইনেই পোশাকবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর এইসব নজরদারি চালানোর জন্য পুরীর মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মোতায়েন করা হয় প্রতিহারি সেবায়েতদের।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২০ অক্টোবর শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পক্ষ থেকে ড্রেস কোড নিয়ে একটি বিশেষ গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়। যেখানে প্রত্যেক সেবায়েতকে ধুতি, তোয়ালে এবং পাট্টা নিয়ে পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়। ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরে সোমবার থেকে পান-গুটখা খেয়ে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিকে সূত্রে খবর, বর্ষবরণের রাতে ১১টা নাগাদ সম্পন্ন হয় পুজোর রীতিনীতি। এরপর মধ্যরাত ১টা ৪০ মিনিট থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় জগন্নাথ মন্দিরের দরজা। পুরীর সেন্ট্রাল জোনের আইজি আশিস সিং জানান, ‘রবিবার মধ্যরাত ১টা ৪০ মিনিট থেকে ভক্তদের দর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। এদিন মধ্যরাত থেকে লম্বা লাইন পড়ে শ্রীমন্দিরের সামনে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশ্রামকক্ষে দাঁড়িয়ে পুজোর জন্য অপেক্ষা করেন ভক্তরা।’ দর্শনের পর উত্তরদিকের দরজা নিয়ে মন্দির থেকে দলে দলে বের হন পুণ্যার্থীরা।
শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মুখ্য প্রশাসক রঞ্জন কুমার দাস জানান, ‘১ জানুয়ারি থেকে জগন্নাথ মন্দিরে দর্শনের জন্য আসা সমস্ত পুণ্যার্থীকে সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হবে।’