রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে কুরুচিকর ভাষা প্রয়োগের অভিযোগে  রিপোর্ট তলব নির্বাচন কমিশনের

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে যে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করার অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অফিস সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কমিশন রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। অই রিপোর্ট তৈরিও করে ফেলেছে সিইও অফিস। আর এই রিপোর্ট দ্রুত পাঠানো হবে বলেই কমিশনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি সূত্রের দাবি, নির্বাচন কমিশন যা নির্দেশ দিয়েছে তা পুরোপুরি মেনে চলা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগ ইতিমধ্যেই দায়ের হয়েছে। এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগী জানান ‘কমিশনকে রিপোর্ট পাঠানো হবে।’

এদিকে পূর্ব পরিকল্পনা মতোই বুধবার সকালে সিইও অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানায় তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। এদিকে বিজেপিও এই ঘটনায় দিলীপের পাশে দাঁড়ায়নি। তাঁকে শো কজ নোটিশ ধরানো হয়েছে। প্রকাশ্যেই বিজেপি নেতারা এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। এদিকে কমিশন সূত্রে খবর, নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর প্রথম এরকম একটি বড় অভিযোগ সামনে এসেছে। ফলে তা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও কমিশন যে ভাববে না, তা সাফ জানানো হয়েছে। রাজ্যে কমিশনের ফুল বেঞ্চ এসেই এ বছর যে কড়া ভূমিকা তারা পালন করবে সেই বার্তা দিয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘আমার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক প্রথমবার নয়, আগেও হয়েছে। কারণ যে দুর্নীতি করে, ভণিতা করে আমি তা সামনেই বলি। মুখ্যমন্ত্রী, যাঁর সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত ঝগড়া নেই তার সম্পর্কে আমার মনে কোন ক্লেশ নেই, কোনও দুর্ভাবনাও নেই। তিনি যে রাজনৈতিক বক্তব্য বারবার বলেছেন, বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় আমি তার প্রতিবাদ করেছি। প্রশ্ন হচ্ছে আমার ভাষা, শব্দ প্রয়োগ নিয়ে, বহু লোকের আপত্তি আছে। আমার পার্টি বলেছে, অন্যরাও বলেছে এটা অসংসদীয়। যদি তাই হয় আমি তার জন্য দুঃখিত।’

প্রসঙ্গত, এ বছর প্রথম থেকেই কমিশন এই নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সতর্ক করেছিল। নির্বাচন কমিশনার নিজে এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে সব রাজনৈতিক দলকে আর্জি জানিয়েছিলেন। একইসঙ্গে কমিশনের তরফ থেকে স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, ভোটের প্রচারে এমন কোনও মন্তব্য বা আচরণ করা যাবে না যাতে অশান্তি বা হিংসা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সঙ্গে এও বলা হয়েছিল কারও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। এরই পাশাপাশি নির্দেশ ছিল, কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা যাবে না। শুধু তাই নয়, স্পষ্ট ভাবে কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল রাজনৈতিক দলের প্রচারে যাতে কোনও ভাবেই নারীদের সম্মান ও মর্যাদা নষ্ট না হয়, তা মাথায় রাখতে হবে। তৃণমূলের তরফ থেকে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তাতে এখানেই নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য় সভাপতি। এছাড়াও কমিশনের তরফ থেকে এ নির্দেশও রয়েছে যে, ভিত্তিহীন বা ভুয়ো বিজ্ঞাপন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 + 2 =