শুক্রবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশান্তি নিয়ে দশ দফা প্রশ্নের একটি তালিকা পাঠিয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার কাছে। চিঠি পাওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যে সেই চিঠির জবাবও দেন কমিশনার। রাজ্যপাল যে চিঠি নির্বাচন কমিশনারকে পাঠিয়েছিলেন সেই চিঠির মূল বক্তব্য ছিল, অনেকেই আমার কাছে জানিয়েছেন, গোটা প্রক্রিয়াটি বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্টের নজরদারিতেই নির্বাচন পরিচালনা করা হোক। এই বিষয় নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের মতামত জানতে চান রাজ্যপাল। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে কমিশনারের উত্তর দেন, এটা এক শ্রেণির মানুষের বক্তব্য। স্পর্শকাতর এলাকায় ভোট পদ্ধতি নিয়ে তাঁরা এই মতামত ব্যক্ত করেছেন। কমিশন এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ২৫২টি এফআইআর দায়ের করেছে। প্রতিটি অভিযোগের তদন্তও করছে পুলিশ।
এরই প্রেক্ষিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানান, ২০১৮-র তুলনায় এবারের পঞ্চায়েত ভোটে ৪২ শতাংশ বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে। কমেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীর সংখ্যাও।
এখানেই শেষ নয়, রাজ্যপাল পুনর্নির্বাচন নিয়েও কমিশনারের কাছে ব্যাখ্যা চান। বোসের বক্তব্য, সাড়ে চার হাজার স্পর্শকাতর বুথের মধ্যে পুনর্নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৬৯৭টি বুথে। যদিও সবকটি স্পর্শকাতর বুথেই পুনরায় ভোট গ্রহণ করা উচিত ছিল। এই প্রস্তাবের ক্ষেত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিতে হয় কতগুলি তথ্যের ওপর ভিত্তিতে করে। আর এর একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। সব রকমের ভোট গ্রহণ সংক্রান্ত কাগজ পরীক্ষা করে অবজারভারদের মতামত নিয়ে যখন নিশ্চিত হওয়া যায় ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে, তখনই পুনরায় ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এবারও তাই হয়েছে। ফলে কমিশনার জানিয়ে দিয়েছেন ভোট গণনার সময় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হয়নি।
এরই পাশাপাশি কমিশনার রাজ্যপালকে জানিয়েছেন, রাজভবন থেকে এই ভোট নিয়ে দু’হাজার অভিযোগ এসেছিল। এছাড়াও ১৭৭ টি অভিযোগ হোয়াটসঅ্যাপে এবং ৪৯৪ টি অভিযোগ মেলের মাধ্যমে করে রাজভবন থেকে জানানো হয়। সবকটি অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।