গঙ্গার ভাঙন এবার গ্রাস করছে খোদ কলকাতা পুরসভাকেও

গঙ্গার ভাঙন এবার গ্রাস করছে খোদ কলকাতাকেও। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে জনবহুল এলাকায় গঙ্গার ভাঙনে ছাদ হারিয়েছে একাধিক পরিবার। আপাতত মাথা গুঁজতে তাঁদের রাখা হয়েছে স্থানীয় পুরসভার স্কুলে। এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে গঙ্গার দুপাড় ক্রমশ ভাঙছে কি না তা নিয়েও।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, রতনবাবু ঘাটের এই ভাঙনে একসঙ্গে বারোটি বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলছেন, গঙ্গার দুতীরের আকস্মিক ভাঙন ঠেকাতে পর্যাপ্ত গাছ লাগাতে হবে। এখানে বিশেষজ্ঞদের ধারনা, ‘কংক্রিটের বাঁধ দিয়ে নদী ভাঙন ঠেকানোর চেয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ গাছ লাগিয়ে তা ঠেকানো শ্রেয়। গাছই পারে দুতীরের মাটিকে শক্ত করে ধরে রাখতে।’ দ্বিতীয়ত, নদীর দুপারের মাটি নরম। সেখানে কোনওভাবেই বাড়ি করা যাবে না। তা স্থিতিশীল নয়। ভাঙন থেকে বাঁচতে হলে নদীর দুপারের নরম পলি অনেকটা ছেড়ে দূরে বাসস্থান তৈরি করতে হবে।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, অতি শীঘ্রই এঁদের বাংলার বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে।
সমস‌্যা সমাধানে ওই বরোর চেয়ারম‌্যান তরুণ সাহার সঙ্গে আলোচনাও সেরেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘একটা জায়গা পাওয়া গিয়েছে। সেখানেই হবে বাংলার বাড়ি। গঙ্গার ভাঙনে যাঁদের বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে তাঁরা মাথার ছাদ পাবেন।’ এদিকে এর পাশাপাশি মেয়র ফিরহাদ প্রশ্ন তোলেন, কেন এতদিন স্কুলবাড়িতে থাকতে হল তা নিয়েও। এর জন‌্য দীর্ঘ নির্বাচনকেই দায়ী করেছেন মেয়র। টানা আড়াই মাস ধরে লোকসভা নির্বাচন চলেছে। এই সময় নির্বাচনী বিধি লাগু থাকার দরুন কোনও কাজ করা যায় না। ফিরহাদের কথায়, প্র’তিটি নির্বাচনের সময় সরকারি কাজ থমকে থাকে। উত্তর কলকাতায় জমি পাওয়াও একটা সমস‌্যা। উত্তর কলকাতায় যাদের বাড়ি গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে তারা পাটুলি কিংবা বেহালায় থাকবেন না। তাই ওই এলাকাতেই জমি খোঁজা হচ্ছিল।‘’

এদিকে পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সুন্দরবন এলাকায় প্রতি বছর ৩-৭ মিলিমিটার পর্যন্ত জলস্তর বাড়ছে। যার জন‌্য দায়ী বিশ্ব উষ্ণায়ন। এই বিশ্ব উষ্ণায়নের জন‌্য নদীর জলের পিএইচ মাত্রারও হেরফের ঘটছে। এখনই সতর্ক না হলে বিপদে পড়বেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 5 =