কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্ঘটনায় অভিযোগের আঙুল প্রাথমিক ভাবে উঠছে মালগাড়ির লোকো পাইলটের দিকেই। তবে মালাগাড়ির লোকো পাইলটদের সম্পর্কে এবার সামনে এল বিস্ফোরক সব তথ্য। যা জানালেন রাজধানী এক্সপ্রেসের প্রাক্তন পাইলট বিজয় বাহাদুর সিং। বিজয় বাহাদুর জানান, নিয়ম অনুযায়ী, আট থেকে দশ ঘণ্টা মালগাড়ির লোকো পাইলটরা নিজের পরিষেবা দিতে পারবেন। অভিযোগ উঠছে তাঁদের দিয়ে ১৬-১৭ ঘণ্টা রেক চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে। শীতের সময় কোনওভাবে এই চালকরা সামলে নিলেও, গরমকালে রীতিমতো শরীর ভেঙে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে রেল মন্ত্রক এবং রেল বোর্ডের কাছে বারবার উত্থাপন করা হলেও, লোকো পাইলট নিয়োগের ব্যাপারে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। ফলে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।
সঙ্গে বিজয় বাহাদুর এও জানান, ‘ওভার ডিউটি করার কারণ অন্য। আট ঘণ্টার বেশি কাজ করানো উচিত নয় এটাই নিয়ম। কিন্তু অবাক হয়ে যাবেন ১০ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টা তিনি ট্রেন চালিয়ে যাচ্ছেন।’ তাঁর আরও সংয়োজন, ‘আমরা বারবার বলেছি লোক নিতে। কিন্তু নিয়োগ হচ্ছে না। স্টাফের সংখ্যা সেফটি ক্যাডারে লোক পাইলট, গার্ড, স্টেশন মাস্টার, কেবিন মাস্টার অনেক কম আছে। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে হইহই। তারপর আর কিছু হয় না।’ এই প্রসঙ্গে সামনে এসেছে আরও বিস্ফোরক সব তথ্য। বিজয় বাহাদুর এও জানান, ‘লোকো পাইলটদের উপর অত্যাচার করা হয়। ছুটি পায় না। অসুস্থ হলে ধমক দিয়ে লোকো পাইলটদের চাপ দিয়ে কাজ করানো হয়। মালগাড়ির লোকো পাইলটরা ১৬ ঘণ্টা থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন। হয়ত গাড়ি চালায় না। তবে বসিয়ে রাখে ওদের। নিয়ম আছে লোকো পাইলট ১২ ঘণ্টার বেশি চালাবে না। কিন্তু ১৬ ঘণ্টাও হয়ে যায় ওরা চালায়। ওদের এমন জায়গায় বসিয়ে দেয় যে যেখানে না খাবার পাবে, না জল পাবে।’ শুধু তাই নয়, সঙ্গে এও জানান, ‘এঁরা ছুটি পান না। সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারেন না। কতক্ষণ কাজ করছেন তার কোনও হিসাব নেই। তার জন্যই শরীরে ক্লান্তি। আর তার থেকেই দুর্ঘটনা।’
একই ধারনা রেলের আধিকারিকদের একাংশের মধ্যেও। শরীর ক্লান্তির জন্যই চোখ বন্ধ হয়ে আসছে লোকো পাইলটদের। এক্ষেত্রেও তেমনি হয়েছে বলে মনে করছেন রেল আধিকারিকদের একাংশ।