যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন উপাচার্য

যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী।তিনি জানান, ‘প্রাক্তন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বর্তমান কর্তৃপক্ষকে দুষে বলেন, ‘এই যে ঘটনাটা ঘটল, তা হঠাৎ ঘটা দুর্ঘটনা নয়। আমি উপাচার্য থাকাকালীন একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছিলাম যাতে পড়ুয়াদের সুরক্ষা বজায় থাকে। তার মধ্যে ছিল সিসিটিভি বসানো, বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ করা, ক্যাম্পাসের মধ্যে মদ-গাঁজা সব বন্ধ করা, প্রতিটি হস্টেলে নজরদারি। হাইকোর্টও তাতে সায় দেয়। পড়ুয়াদের ভালো রাখতেই তো এই কঠোর পদক্ষেপগুলো করা। এর পাশাপাশি ক্যাম্পাসে রাউন্ড দিতাম। অনৈতিক কাজ দেখলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতাম। নেশার আখড়া বন্ধ করতেই ক্যাম্পাস জুড়ে জোরালো আলো, ফ্লাড লাইট লাগানো। আন্দোলন করে আমাকে সরানোর সঙ্গে সঙ্গে ওই নিয়মগুলোও সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে তুলে দেওয়া হয়েছে। সব সিস্টেমগুলো ডিসমেন্টাল করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে অপদস্ত করা হয়। সেই সময় নেওয়া আমার উদ্যোগকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমার সময় প্রায় সব কিছুই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ক্যাম্পাস একেবারে শুদ্ধ ছিল। আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সব বন্ধ করা হয়। আমি পদত্যাগের পর সব বন্ধ হয়ে গেল। আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে গেল।’’ এরই রেশ ধরে প্রাক্তন উপাচার্য আক্ষেপ করে বলেন, ‘সেই সময় কর্তৃপক্ষ যদি পদক্ষেপ করত, ছাত্রনেতারা এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকতেন তাহলে এই কাণ্ড ঘটত না।’

এরই রেশ ধরে রাজনৈতিক নেতাদের দুষে অভিজিৎবাবু বলেন, ‘আজকের এই ঘটনার জন্য শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষই দায়ী নয়। সেই সময় যে সকল রাজনৈতিক নেতা এবং ছাত্রনেতারা আমার নেওয়া উদ্যোগগুলিকে বন্ধ করে দিয়েছিল তাঁরাও পরোক্ষভাবে দায়ী।’ পাশাপাশি এও জানান,’আমি থাকাকালীন অন্তত দুবার করে প্রতি মাসে গিয়ে হস্টেল পরিদর্শন করতাম। বহিরাগতদের অনুরোধ করে বলতাম যাতে চলে যায়। মধ্যরাতেও ঘুরতাম। যাতে অনৈতিক কাজ না হয়।’ এই প্রসঙ্গেই স্পষ্ট ভাষায় অভিজিত চক্রবর্তী এও জানান,  ‘স্টুডেন্ট পপুলারিটিকে বেস করে একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। সেক্ষেত্রে ইউজিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইডলাইন মানতে হবে যাতে কোনও অনৈতিক কাজ বরদাস্ত করা না হয়।’

স্বপ্নদীপের ঘটনায় যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্যের আফসোস, তাঁর দেখানো পথে যদি বর্তমান হাঁটত তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। হাইকোর্টের নির্দেশ কর্তৃপক্ষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলে বিশ্বজনীন খ্যাতি থাকা এই পাঁচতারা বিশ্ববিদ্যালয় যাদবপুরের গায়ে কলঙ্কের কালি লাগত না বলে দাবি প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + six =