বাংলার সীমান্ত এলাকায় হিংসার ঘটনা কেন এই প্রসঙ্গে খোঁজখবর করতে বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গেল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। কোচবিহার সফরের তৃতীয় দিনে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ রাজ্যপাল সিতাই যান রাজ্যপাল। তাঁর কনভয় থামে ৭৫ নম্বর বিএসএফের বিওপিতে। সেখানে বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে মিনিট দশেকের এই বৈঠক করেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, সীমান্তবর্তী জেলা কোচবিহার কেন বার বার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, কী কারণে হিংসা ছড়াচ্ছে, সে বিষয়ে বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন রাজ্যপাল।
বাস্তবিক ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকেই শাসক এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সংঘর্ষে উত্তপ্ত কোচবিহারের নানা অংশ। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে দিনহাটার গীতালদে জারি ধরলা গ্রামে। এদিকে এ অভিযোগও রয়েছে, এই এলাকা দিয়ে অবাধে অনুপ্রবেশ এবং চোরা কারবার হয়। সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে। তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়, বিএসএফের মদতে সেখানে অশান্তি হয়েছে। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় সাংবাদিক বৈঠক করে প্রশ্ন তোলেন, বিএসএফের কড়া পাহারা থাকা সত্ত্বেও কী করে বাইরে থেকে দুষ্কৃতী এসে হামলা চালায়। তবে পাল্টা যুক্তিও দেওয়া হয় বিজেপির তরফ থেকে। দিনহাটা শহর মণ্ডল সভাপতি অজয় রায় জানান, ‘শাসক দল আশ্রিতরা মাদক পাচার কাজে যুক্ত।’ ভোটের আগে এই রকম অশান্তি দেখা দিচ্ছে বাকি সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল এবং বিএসএফের বৈঠক ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
এদিকে এদিন সকালে রাজ্যপাল দেখা করতে যান বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে। রাজভবন সূত্রে শনিবারই জানানো হয় যে, রাজ্যপাল সকলের জন্য। মোবাইল রাজভবন শুধুমাত্র বিরোধীদের সঙ্গে নয়, শাসক দলের যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের সঙ্গেও রাজ্যপাল যোগাযোগ করছেন। কোচবিহার সফরে গিয়ে কার্যত সেটাই করে দেখালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। পাশাপাশি, গীতালদহের নিহত তৃণমূল কর্মী, যাকে আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী বলে দাবি করেছে বিজেপি, তাঁর পরিবারের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন রাজ্য়পাল। পাশে থাকার আশ্বাস দেন। যদিও তার আগে, কোচবিহার সার্কিট হাউসে সি ভি আনন্দ বোসের কাছে নালিশ জানাতে হাজির হয় বিজেপি-বাম-কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা।
এদিকে সূত্রে এ খবরও মিলছে, বাসন্তীতে নিহত যুব তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে এদিন ফোনে কথা হয় রাজ্যপালের। কী সাহায্য দরকার, তা জানতে কলকাতায় ফেরার ট্রেন থেকেই নিহত যুব তৃণমূল কর্মীর পরিবারকে ফোন করেন রাজ্যপাল। প্রত্যুত্তরে, নিহত যুব তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সদস্যরা জানান, আমরা শান্তি চাই।’