তিন চিকিৎসক কাজে যোগ না দিলে মোটা জরিমানার কথা শোনাল স্বাস্থ্যদপ্তর 

চিকিৎসকদের বদলি নিয়ে এবার কঠোর নির্দেশ স্বাস্থ্যদপ্তরের। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে,কাজে যোগ দিতে হবে। অন্যথায় গুনতে হতে পারে জরিমানা। এদিকে এই বদলি প্রসঙ্গে আসফাকুল্লা-অনিকেত-দেবাশিস জানিয়েছেন তাঁদের পছন্দ কলকাতা এবং শহরাঞ্চলের আশপাশের হাসপাতাল।  পুরুলিয়া-মালদহ উত্তর দিনাজপুরে যেতে নারাজ তাঁরা। আর এখানেই এই তিন অতিবাম চিকিৎসকের আচরণে সোচ্চার সমাজের নানা স্তরের মানুষ। খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন শহর ছেড়ে যেতে চাইছেন না এই তিন চিকিৎসক তা নিয়েও।
এদিকে সূত্রের খবর, সময়মতো কাজে যোগ না দিলে মোটা টাকা জরিমানা হতে পারে তিন অতিবাম চিকিৎসকেরই। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, হাসপাতালে সিনিয়র রেসিডেন্ট পদটি ‘বন্ড’ পোস্টিং। স্নাতকোত্তর পরীক্ষার পর সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে যোগ দিলে তিন বছরের বন্ড থাকে। বন্ড না মানলে, কিংবা তিন বছরের আগে বন্ড অমান্য় করে বেরিয়ে এলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। তিন বছরে এই টাকার অঙ্কের পরিমাণ মোট ৩০ লক্ষ টাকা! অর্থাৎ, আসফাকুল্লা-অনিকেত যদি কাজে যোগ না দেন, তা হলে সর্বাধিক ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিতে হতে পারে তাঁদের।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়,মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যদপ্তরের নয়া যে নোটিস জারি করা হয় তাতে সিনিয়র রেসিডেন্টদের ‘নিয়মমাফিক’ বন্ড পোস্টিংয়ের কথা বলা হয়েছে। সেই ‘পোস্টিং’-এ সকলে কাজে যোগ দিলেও তিন চিকিৎসক, দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়া, অনিকেত মাহাতো বুধবার ফের স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। তবে স্বাস্থ্যভবনের তরফ থেকে তাঁদের সর্বাগ্রে  কাজে যোগ দেওয়ার কথাই জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে দেবাশিস হালদার জানান, ‘আমাদের লোকেরা রয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’
এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসকের বক্তব্য়, অতিবাম কিছু সিনিয়র চিকিৎসক এদের মাথা খাচ্ছেন। তাঁদের উস্কানিতেই এমনটা হচ্ছে। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষে এই প্রসঙ্গে এই তিন চিকিৎসকের  উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা মানুষের পাশে থাকবেন বলে শপথ নিয়েছিলেন, এখন কলকাতার আশপাশে ঘুরঘুর করছেন।’ এরই রেশ ধরে এই তিন চিকিৎসককে কুণালের প্রশ্ন, দূরের মানুষকে পরিষেবা দিতে কী অসুবিধা তা নিয়েও। আসলে মানুষকে সেবা দিতে চাইছেন।
এদিকে সূত্রে এ খবরও মিলছে, দেবাশিস হালদার সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন বছর দুয়েক আগে। সিনিয়র রেসিডেন্টশিপের আর এক বছর বাকি রয়েছে তাঁর। ফলে তাঁকে অবশিষ্ট এক বছরের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। সঙ্গে এও খবর মিলছে, নির্দেশ মেনে কাজে যোগ না দিলে ভবিষ্যতে সমূহ সমস্যায় পড়তে পারেন আসফাকুল্লা, অনিকেতও। কারণ,আগামী দিনে কোনও কলেজে অধ্যাপনা করতে গেলেও অন্তত এক বছর সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। এদিকে সূত্রে এ খবরও মেলে, বুধবার প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভেবেছিলেন এই তিন চিকিৎসক। তবে হাইকোর্ট থেকে খালি হাতে ফিরতে হবে এই আশঙ্কায় তারা যাননি। তবে আগামী ৩০ মে ফের তারা হাইকোর্টে মামলা করার কথা ভাবছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − twelve =