শীর্ষ আদালতে ফের পিছিয়ে গেল রাজ্যের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি

শীর্ষ আদালতে ফের একবার পিছিয়ে গেল রাজ্যের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলবেন বলে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সময় চেয়ে নিলেন রাজ্যপালের আইনজীবী। এদিকে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর, আগামী দুই সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এদিন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যপালের আইনজীবী জানান, বুধবারই রাজ্যপালের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা কী অবস্থায় রয়েছে, সে বিষয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলে স্ট্যাটাস রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টকে দেবেন রাজ্যপালের আইনজীবী। উল্টোদিকে এদিন আবার রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যপালের দ্বারা নিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যরা ৬ মাস মেয়াদের বেশি কাজ করতে পারেন না। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, ‘আমরাও চাই না অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যরা দীর্ঘদিন থাকুন। যতদিন না স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হচ্ছে ততদিন এই অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চলতে পারে।’ এদিনও সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে তারা চায় দুই পক্ষের আলোচনা এবং সহমতের ভিত্তিতেই উপাচার্য নিয়োগ হোক।

এদিকে আবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, মেয়াদ শেষের পরও কীভাবে উপাচার্যরা যাচ্ছেন? সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘উপাচার্যদের টার্ম শেষ। তারপরও কীভাবে পরিযায়ী ভিসিরা যাচ্ছেন, তা আমরা জানি না। আমরা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমাদের পক্ষে রায় আসবে।’

ফলে সব মিলিয়ে কার্যত বেহাল অবস্থা রাজ্যের উচ্চ শিক্ষায় কারণ, রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনওটিতে স্থায়ী উপাচার্য নেই। এদিকে রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে অফিশিয়েটিং উপাচার্য নিযুক্ত ছিলেন, তাঁদের ছ’মাসের কার্যকালের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। এখন সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তাঁরা শুধুমাত্র কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যেও আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত উপাচার্যহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এদিকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের মাঝেই কার্যকরী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। আর এই ইস্য়ুতে রাজ্য়পালের সঙ্গে নবান্নরে সংঘাতের পাশাপাশি শাসকদলের নেতামন্ত্রীর সঙ্গেও উত্তপ্ত বাদানুবাদ হতেও দেখা গেছে।

এমনই এক প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষা মহলের এক বড় অংশ মনে করেছেন, এই বেহাল অবস্থার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দৈনন্দিন কাজকর্ম অনেকাংশেই ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে একেবারে দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচনও। এমন এক অবস্থায় শিক্ষা দফতর কিংবা রাজভবনকে মধ্যস্থতার ভূমিকায় এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলেই মনে করছে শিক্ষা মহল। কারণ, ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে এই বিষয়গুলি আরও থমকে যাবে এবং ফলে ভোট পরবর্তী সময়েও এই সমস্যাগুলি চলতে থাকবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × one =