সুপ্রিম কোর্টে এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল নিট-ইউজি সংক্রান্ত মামলার শুনানি

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে নিট-ইউজি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। তবে আদালত সূত্রে খবর, তা আপাতত আস্থগিত হয়ে গেল। আপাতত এক সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে গেল এই মামলার শুনানি। আগামী ১৮ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।

নিট কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি। কিন্তু মামলাকারীদের বক্তব্য তারা সেই হলফনামার কপি এখনও হাতে পাননি। সেই কারণে তাঁদের বাড়তি সময় দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এক সপ্তাহের জন্য এই মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আগের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, এই পরীক্ষা আবার নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে তাঁরা। যদিও ফের পরীক্ষার দরকার নেই বলে আদালতে দাবি করেছে কেন্দ্র। আর এনটিএ-র বক্তব্য, পরীক্ষার কোনও প্রশ্নপত্র নাকি হারায়নি, আর পাটনায় কোনও ট্রাঙ্ক ভাঙা হয়েছে এমন খবর তাদের কাছে নেই। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, দেখতে হবে প্রশ্নপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছিল কিনা। যদিও এই ঘটনার তদন্তকারী দল সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, স্থানীয় কিছু জায়গায় প্রশ্ন বেরিয়ে গেছিল। তবে তার পরিসর অল্প।

সিবিআই নিট কাণ্ডের তদন্ত করে ইতিমধ্যে একাধিকজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ৮ জনকে পাটনা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, কোথাও কোনও ট্রাঙ্ক থেকে প্রশ্নপত্র গায়েব হয়নি। প্রতিটি প্রশ্নপত্রে একটি বিশেষ সিরিয়াল নম্বর থাকে এবং তা নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীর কাছেই যায়। তাঁদের কাছে যে রিপোর্ট এসেছে তাতে কোনও নিয়ম বহির্ভূত কাজ ধরা পড়েনি। এমনকী কমান্ড সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাতেও কোনও অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি।

এদিকে ‘নিট পরীক্ষায় বড় মাপের দুর্নীতি হয়নি’, ফের সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানায় কেন্দ্র। আর সেই কারণেই ফের পরীক্ষা নেওয়ারও কোনও ইচ্ছা নেই কেন্দ্রের, এমনটাই জানানো হয়েছে হলফনামায়। বাতিল হওয়া নিট পরীক্ষার কাউন্সেলিংও করার ব্যবস্থা জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে করা হবে বলেই জানিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে হলফনামায় এও জানানো হয়েছে, ফের একবার মেডিক্যালে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই তাদের। শুধুমাত্র বেনিয়মের সন্দেহের বশে পরীক্ষা নিলে তা ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থীর উপরে চাপ সৃষ্টি করবে। অর্থাৎ, নিট বিতর্কে দুর্নীতির অভিযোগ মানতে নারাজ কেন্দ্র। এর পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, নিট-ইউজি-র কাউন্সেলিং, যা সম্প্রতিই স্থগিত রাখা হয়েছিল, তাও শুরু করা হবে চলতি জুলাই মাসেরই তৃতীয় সপ্তাহে। মোট চার ধাপে কাউন্সেলি হবে। যদি কোনও পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বেনিয়মের প্রমাণ মেলে, তবে তাদের কাউন্সেলিং বাতিল করে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই নিট মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্র ও ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রাপ্ত নম্বরে গরমিলের অভিযোগ নিয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতেই বুধবার হলফনামা জমা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেই হলফনামাতেই বলা হয়েছে যে গত ৫ মে দেশজুড়ে হওয়া নিট পরীক্ষায় কোনও বড় মাপের বেনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। কেন্দ্রের এই দাবি যে সঠিক তার প্রমাণস্বরূপ কেন্দ্রের তরফে আইআইটি মাদ্রাজের একটি রিপোর্টও দেওয়া হয়, যেখানে নিট পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার জন্য কোনও বড় মাপের বেনিয়মের প্রমাণ মেলেনি বলেই উল্লেখ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × one =