বেআইনি দখলদারি রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ হাইকোর্টের

কলকাতা পুরভবন সংলগ্ন এলাকায় হকারদের বেআইনি দখলদারির উচ্ছেদ নিয়ে টালবাহানা চলছিলই। তবে এই বেআইনি দখল রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ করতে দেখা গেল কলকাতা হাইকোর্টকে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে এই বেআইনি দখলদারি চিহ্নিতকরণের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ, আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে বেআইনি দখল চিহ্নিত করে সরাতে হবে।এর পাশাপাশি শহরের কোন জায়গাটি ভেন্ডিং জ়োন এবং কোন জায়গাটি নন ভেন্ডিং জোন, তাও চিহ্নিতকরণের কাজ ৬ সপ্তাহের মধ্যে সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

কলকাতা শহরে ফুটপাথ দখল করে রাখা ও হকারদের যত্রতত্র বসে যাওয়া নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ হতে দেখা যায় প্রধান বিচারপতিকে। এদিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম মামলার শুনানির সময় কলকাতা ও শহরতলির বেশ কিছু জায়গার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, নিউটাউনের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার দু’ধারে হকাররা বসে রয়েছেন। ধর্মতলাতেও গ্র্যান্ড হোটেলের নীচে থাকা দোকানগুলির কথাও উঠে আসে প্রধান বিচারপতির কথায়। প্রধান বিচারপতি বললেন, গ্র্যান্ড হোটেলের নীচে অনেক দোকান আছে। কিন্তু সেই দোকানগুলির সামনের ফুটপাথ দখল করে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে দোকানগুলি ঠিকভাবে দেখাই যায় না, সে কথাও জানান প্রধান বিচারপতি।

এদিকে আদালত সূত্রে খবর, মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীকান্ত দত্ত এদিন কলকাতা পুরনিগম সংলগ্ন এলাকার ছবিও আদালতে পেশ করেন এবং প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মামলাকারীর আইনজীবীর জমা দেওয়া ছবি দেখে প্রধান বিচারপতি কলকাতা পুরনিগমের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, বিষয়টি দেখার জন্য। প্রধান বিচারপতি আরও মন্তব্য করেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যাতে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেন। এই নিয়ে রাজনীতি না করার পরামর্শও দেন প্রধান বিচারপতি।প্রধান বিচারপতি মামলার শুনানি চলাকালীন এদিন মন্তব্য করেন, ‘শহরে একটি প্রবণতা রয়েছে, কোথাও কেউ ফুটপাথে বসে পড়লেই সাধারণ মানুষ সেখানে ভিড় করছেন। এক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব রয়েছে।’ একইসঙ্গে বিচারপতির সংযোজন, ‘এই বিষয়ে রাজনীতি জড়িয়ে গেলেই আর কাজ হবে না।’

এদিন হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান,কিছু হেরিটেজ বাজার এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজ্য সেগুলি নিয়ে ব্যবস্থাও নিচ্ছে। অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ‘ভেন্ডিং কমিটির ১০৪টি লোকাল বডি রয়েছে। সেই লোকাল বডিগুলিকে ইতিমধ্যেই পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনটি ভেন্ডিং জ়োন ও কোনটি নন ভেন্ডিং জ়োন না চিহ্নিত করার জন্য।’ অ্যাডভোকেট জেনারেলের এই বক্তব্য শোনার পরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছেন, লোকাল বডিগুলিকে এই চিহ্নিতকরণের কাজ ৬ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − two =