রাজভবনে শ্লীলতাহানির ঘটনার পুলিশি তদন্তে অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি হাইকোর্টের

কাজল সিনহা

 

রাজভবনে শ্লীলতাহানির ঘটনায় পুলিশি তদন্তে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত স্থগিতাদেশ রয়েছে। পরবর্তী শুনানি আগামী মাসের ১০ তারিখ। হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যপালের ওএসডি-সহ রাজভবনের যে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল, তা আপাতত স্থগিত রাখতে হবে। ১০ জুন পরবর্তী শুনানির আগে কোনও তদন্ত করা যাবে না। এই নির্দেশে আপাতত স্বস্তি ফিরেছে রাজভবনে। একইসঙ্গে বিচারপতি সিনহার প্রশ্ন, ওএসডি-র বিরুদ্ধে পাঁচ দিন পর কেন অভিযোগ তোলা হল, তা নিয়েও।

এদিকে রাজভবনের অন্দরে অস্থায়ী মহিলাকর্মীকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, তার জেরে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। রাজভবনের একাধিক কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। এবার সেই মামলায় তদন্তে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই প্রমাণ নষ্ট হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও শুক্রবার মন্তব্য করতে শোনা যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে।

এদিকে অভিযোগকারিণী দাবি করেছেন, তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। তিনি আদৌ আটকেছিলেন কি না সেটা তদন্তের বিষয় বলে মনে করছেন বিচারপতি। বিচারপতি সিনহা বলেন, এই মুহূর্তে তদন্তে স্থগিতাদেশ দিলে মূল তদন্ত প্রভাবিত হবে বলে মনে হয় না। এরই প্রেক্ষিতে মামলাকারীর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার দাবি করেন, জোর করে ধরে রাখার ধারা কোনওভাবেই প্রযোজ্য নয়। ঘটনার ১৩ দিন পর অভিযোগ দায়ের হল কেন সেই প্রশ্নও এদিন তোলেন তিনি। আইনজীবী উল্লেখ করেন, পুরো ঘটনা মামলাকারী জানেন বলে দাবি করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। তিনি আরও বলেন, ‘একবার বলা হচ্ছে ৩৪১ ধারা  দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ আটকে দেওয়া হয়েছে। আবার পরের লাইনে লেখা হচ্ছে, কোনও প্রকারে বেরিয়ে আসেন ওই মহিলা।

এদিন বিচারপতি সিনহার পর্যবেক্ষণ, কিছু শব্দ একটু অ্যাবসার্ড অর্থাৎ অস্বাভাবিক লেগেছে তাঁর। তাই তদন্তে স্থগিতাদেশ দিতে চায় আদালত। রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত বলেন, ‘অভিযোগ এলে, প্রাথমিকভাবে সেটা সত্যি ধরে নিয়ে ধারা যুক্ত করাই পুলিশের কর্তব্য। আদালতে এভাবে দ্রুত মামলা করার গুরুত্ব বোঝা যাচ্ছে না।’ এজি-র বক্তব্য, ‘মামলাকারীকে রক্ষাকবচ দিলে রাজ্যপালকে রক্ষাকবচ দেওয়া হচ্ছে মনে হবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − four =