বিজেপির ধরনায় জড়িয়ে গেল কোচবিহার থেকে চোপাড়ার ইস্যুও

কোচবিহার এবং চোপড়ার ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিধানসভার বাইরে ধরনায় বসলেন বিজেপির মহিলা বিধায়করা। অগ্নিমিত্রা পলের নেতৃত্বে ওই ধরনায় বসেন শিখা চট্টোপাধ্যায়, চন্দনা বাউড়ি, সুনীতা সিংহ প্রমুখ। তাঁদের সকলের গলায় ওই দুই এলাকার ঘটনা নিয়ে নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ঝুলতে দেখা যায়। কোচবিহারের মাথাভাঙায় বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের এক মহিলা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল এই ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, নিছক ঘাস কাটা নিয়ে পারিবারিক বিবাদকে বিজেপি রাজনীতির রং দিচ্ছে।

এদিকে বিজেপি শিবির সূত্রে খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবারও সাত সদস্যের এক প্রতিনিধিদল গঠন করে কোচবিহারের ঘটনার তদন্ত করতে। রাতে কোচবিহারে যান জাতীয় মহিলা কমিশনের এক সদস্য। তাঁরা নিগৃহীতার সঙ্গে কথা বলেন। রবিবারই ঠিক হয়, ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির মহিলা বিধায়করা বিধানসভায় ধরনা দেবেন। সেইমতো এদিন তাঁরা ধরনায় বসেন। যদিও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের ধরনার অনুমতি দেননি। ফলে তাঁরা বিধানসভার গাড়ি বারান্দায় বসে পড়েন। ইতিমধ্যে চোপড়ার ঘটনা সামনে আসে। অগ্নিমিত্রা তাঁদের ধরনায় চোপড়ার ঘটনাকেও জড়িয়ে নেন।

এদিকে আবার চোপড়ার একটি ভিডিও রবিবার ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, তাজমুল ওরফে জেসিবি নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা রাস্তায় ফেলে দুই যুবক-যুবতীকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে পেটাচ্ছে। জেসিবির সঙ্গে আরও দু-একজনও মারে হাত লাগাচ্ছে। আর গোটা দৃশ্য গোল হয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে বহু মানুষ। কিন্তু কাউকে কোনও প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রের খবর, ওই যুগল নাকি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। তাই সালিশি করার নামে ডেকে এনে তাঁদের পেটানো হয়। জেসিবি চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস চোপড়ার ঘটনা নিয়ে মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন।

ওই ঘটনা নিয়ে রবিবার থেকেই বঙ্গ রাজনীতি তোলপাড়। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য ঘটনার উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ করেন এক্স হ্যান্ডেলে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সোমবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাদের উপর তৃণমূল নেতাদের অত্যাচার জাতীয় স্তরে নিন্দনীয়। তা সে কোচবিহার হোক, চোপড়া হোক কিংবা উত্তর দিনাজপুর হোক। এদিকে বিধানসভার স্পিকার বলেন, আমি বিজেপি বিধায়কদের ধরনার অনুমতি দিইনি। তারপরও ওঁরা বসেছেন। মার্শালকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। অগ্নিমিত্রা বলেন, তৃণমূলের দুই নতুন বিধায়ক ধরনায় বসেছেন, তাতে স্পিকারের আপত্তি নেই। আমরা বসলেই আপত্তি কেন। স্পিকার বলেন, তৃণমূল বিধায়করা অনুমতি নিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − fifteen =