মাটিতে পাতা ঝাঁ চকচকে টাইলস। রয়েছে চলমান সিঁড়ি। দক্ষিণেশ্বরের আদলেই কালীঘাটে মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য তৈরি হয়ে গেল স্কাইওয়াক। জানা গিয়েছে, আগামী ১৪ এপ্রিল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের হাত ধরেই উদ্বোধন হতে চলেছে এই নতুন স্কাইওয়াকটি। তার আগে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় স্কাইওয়াকের খুঁটিনাটি ‘লাস্ট মিনিটের’ জন্য খতিয়ে দেখে নিতে আসরে নেমেছে কলকাতা পুরসভা ও নির্মাণকারী সংস্থা।
পুরসভা সূত্রে খবর, এই স্কাইওয়াকে ওঠা-নামার জন্য রয়েছে মোট তিনটি সিঁড়ি, লিফ্ট ও চারটি চলমান সিঁড়ি। এছাড়াও, দেওয়ালে দেওয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কালীঘাট মন্দিরের পটচিত্র। সৌন্দর্যায়নের জন্য তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি ডোম বা গম্বুজ। তার সঙ্গেই জুড়ে দেওয়া হয়েছে নজরকাড়া আলোকসজ্জাও। এদিকে সূত্রে খবর, কালীঘাট মন্দিরে যাওয়ার জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রোড ও কালীঘাট থানার সামনে থাকবে এই স্কাইওয়াকের মুখটি। সেখান থেকে উঠে পড়লে এক হাঁটায় সরাসরি পুণ্যার্থীরা পৌঁছে যেতে পারবেন কালীঘাট মন্দিরে। পাশাপাশি, এই স্কাইওয়াক ধরেই আবার যাওয়া যাবে কালীঘাট মার্কেট চত্বরেও। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে দক্ষিণেশ্বরের আদলে এই স্কাইওয়াক তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। হকার সমস্যা ও নানা জটের জেরে কাজ শুরু ২০২২ সালে। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, আঠারো মাসের মধ্যে নির্মাণের কাজ শেষ করে মন্দির সংলগ্ন হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেবে পুরসভা। তবে নানা টালবাহানায় সেই আঠারো মাস এসে ঠেকল তিন বছরে। অবশেষে ৮২ কোটি টাকা খরচ করে ‘স্বপ্নের’ স্কাইওয়াক তৈরি করল কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অর্থনৈতিক সংকট, পরিকল্পনার বেশ কিছু অংশের ত্রুটি এবং ১৭০ মিটার হাইড্রেনের অবস্থানের কারণে বছর বছর ধরে কাজ পিছিয়েছে। সেই কারণেই স্কাইওয়াক তৈরি করতে এতটা বেগ পেতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। সঙ্গে এও জানা গিয়েছে, স্কাইওয়াক নির্মাণে ২০২১ সালের শুরুতেই হকার্স কর্নারের হকারদের যতীন দাস পার্কে অস্থায়ী পুনর্বাসন দেওয়া শুরু হয় পুরসভা তরফে। তারপর স্কাইওয়াক-সহ নতুন বহুতল হকার্স কর্নার তৈরির কাজে হাত লাগায় তারা। ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে সেই নতুন হকার্স কর্নারটি। বুধবার শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সেই মার্কেটে মোট ১৭৫ জন ব্যবসায়ীর হাতে নতুন দোকানের চাবি তুলে দিয়েছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। এই হকার পুনর্বাসন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায়ও। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, মোট ১৫ হাজার বর্গফুটের বেশি এই পাঁচ তলা মার্কেটের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় রয়েছে পুরসভার অফিস ও বেশ কয়েকটি হকারদের দোকান। তিন তলা ও চার তলার গোটা ফ্লোরজুড়ে তৈরি হয়েছে নতুন হকার্স কর্নার। ভবনের পাঁচ তলায় থাকবে পুরসভার আলোক বিভাগের অফিস।