গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন কলকাতা পুরসভাও। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে গঠিত এই তদন্ত কমিটিতে সাতজন সদস্য রয়েছেন। কমিটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন কলকাতা পুরসভার যুগ্ম কমিশনার। তাঁর নেতৃত্বে মোট ছয় জন প্রতিনিধি এই বিপর্যয় কারণ অনুসন্ধান করবেন। এই ৬ জন প্রতিনিধি হচ্ছেন সিভিল বিভাগের ডিজি, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, ঐতিহ্য এবং পরিবেশ বিভাগের ডিজি, কলকাতা পুলিশের একজন শীর্ষকর্তা, কলকাতার বিএলআরও, কলকাতা পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক মুগ্ধা চক্রবর্তী। পুরসভার কমিশনার ধবল জৈন নির্দেশ দিয়েছেন ৭ দিনের মধ্যে এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেবে মেয়রের কাছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তদন্ত কমিটির মূলত দেখবে জমিটি কার নামে ছিল এবং কোনও হস্তান্তর করা হয়েছিল কিনা তাও। পাশাপাশি যে মাপের বহুতল তৈরি করা হচ্ছিল সেটি এই জমির জন্য যথেষ্ট ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখবে এই তদন্ত কমিটি। এর পাশাপাশি বিল্ডিং প্ল্যান কে অনুমোদন দিয়েছিল, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। কারণ এই নির্মাণ যে বেআইনি, তা মুখ্যমন্ত্রী খোদ দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলে গিয়েছিলেন। দমকল, সিইএসসি, কলকাতা পুরসভা সহ যে জায়গাগুলি থেকে বিল্ডিং প্ল্যান পাওয়ার কথা সেখান থেকে অনুমোদন পেয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।
গার্ডেনরিচের এই বহুতলের নির্মাণ সামগ্রীর নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এবার তার সঙ্গে দেখা হবে এই নির্মাম সামগ্রীর মান কেমন ছিল তাও। অর্থাৎ যে সামগ্রী গুলি দিয়ে বহুতলটি তৈরি করা হয়েছিল তা যথোপযুক্ত ছিল কিনা, সেগুলির মান কী রকম ছিল, সেবিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।
এই বিপর্যয়ের জেরে এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন একাধিক। আশপাশের বস্তি এলাকার একাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারও বিস্তারিত তথ্যের উল্লেখ থাকবে এই রিপোর্টে। এরই পাশাপাশি পুরসভার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠছে, সেগুলি সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হবে। এদিকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বহুতলের একাধিক ফ্ল্যাট ইতিমধ্যে বিক্রিও হয়ে গিয়েছে। যে ফ্ল্যাট গুলি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলো কী দামে বিক্রি করা হয়েছিল, সঠিক পন্থায় বিক্রি করা হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখবেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।