কাশী বোস লেনে মহিলার মৃত্যুর কারণ জানাল কলকাতা পুলিশ

শনিবার বিকেলে খাস কলকাতার কাশী বোস লেনে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় এক মহিলার দেহ। তদন্তে নামে পুলিশ। রবিবার মৃতার নাম, পরিচয় জানাল পুলিশ। মৃতার নাম সুপর্ণা শীল। বয়স ৪৫ বছর। শ্যামপুকুর থানার রাজা কালিকৃষ্ণ ২ নম্বর লেনের বাসিন্দা। বাসিন্দা। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, মহিলা মানসিক দিক থেকে অসুস্থ ছিলেন।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার দেহ উদ্ধারের পর এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ১১ তারিখ বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মহিলা একা ওই গর্তের দিকে যাচ্ছেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তিনি গর্তের কাছে গিয়ে কোনওভাবে পড়ে যান। তার পরে উঠতে পারেননি এবং সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপর্ণা তাঁর দাদা মারা যাওয়ার পর ভাইপো ও বৌদির সঙ্গে থাকতেন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে শুরু হয়েছিল কিছু শারীরিক সমস্যাও। সুপর্ণাদেবীর পরিবার সূত্রে খবর, অসুস্থার জেরে মাঝে মধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন তিনি। এমনকী যেখানে সেখানে মল, মূত্র ত্যাগের সমস্যা দেখা গিয়েছিল।

এদিকে শনিবার মৃতদেহ উদ্ধারের সময় পাশে একটি প্লাস্টিকের বোতল উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশকর্তারা মনে করছেন মহিলা হয়তো প্রাকৃতিক কর্ম সারতে গিয়ে গর্তের মধ্যে পড়ে যান। তার পরে আর উঠতে পারেননি। তবে মৃত্যু কী করে হল তা স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার বিকালে খাস কলকাতার কাশী বোস লেনের রাস্তা খুঁড়ে পাওয়া যায় সুপর্ণার অর্ধনগ্ন মৃতদেহ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ওই এলাকায় জলের পাইপ লাইনের কাজের জন্য পিচের রাস্তা খোঁড়া হয়। ১০ তারিখ পর্যন্ত সেই কাজ চলে। কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের দাবি, তার পরেই মাটি দিয়ে ওই গর্ত বুজিয়ে ফেলা হয়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করে। একইসঙ্গে মৃতদেহ উদ্ধারের পরই এলাকায় একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়।

এদিকে সুপর্ণাদেবীর পরিবারের বক্তব্য, ছোট থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন সুপর্ণা শীল। প্রায় প্রতিদিনই তিনি ভোর সাড়ে তিনটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন। যেমনটা বেরিয়েছিলেন ১১ তারিখ। আবার ঠিক সময়মতো বাড়িও ফিরে আসতেন। তবে এবারে ফিরে না আসায় পরিবারের তরফ থেকে প্রাথমিকভাবে খোঁজাখুঁজি শুরু হলেও অতটা গা করেনি পরিবারের লোকজন। কারণ সুপর্ণা শীল যেখানেই যেতেন ঠিক ফিরে আসতেন দাবি পরিবারের। এবারেও ভেবেছিলেন তেমনটাই হবে। কিন্তু, কে জানতো আর হবে না বাড়ি ফেরা। পরিবারের এক মহিলা সদস্য় এই প্রসঙ্গে জানান, ‘ওরকম তো মাঝেমাঝেই হয়। বাড়ি থেকে চলে যায়। আবার চলে আসে। এবার যে ফিরবে না কী করে জানব। আমরা ১১ তারিখের পর থেকেই খোঁজ করছিলাম। কিন্তু পাইনি। শনিবার বিকালে কাশী বোস লেনে দেহ উদ্ধারের পরেই আমরা থানায় যাই। পুলিশকে সবটা খুলে বলি। তারপর তো দেহ দেখে আমরা চিনতে পারি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − 10 =