ডিবুস্টিং প্রক্রিয়ায় ল্যান্ডার থাকবে স্বয়ংক্রিয় মোডে, জানালেন প্রাক্তন ইসরো প্রধান

ভারতবাসীর নজর এখন চন্দ্রযান-৩-এর দিকেই। আর এই চন্দ্রযান ৩ নিয়ে এবার মুখ খুলতে দেখা গেল প্রাক্তন ইসরো প্রধানকে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর ডিবুস্টিং কৌশল শুরু হলে, ল্যান্ডারটি ‘স্বয়ংক্রিয় মোডে’ থাকবে। ডেটার উপর ভিত্তি করে এবং নিজস্ব বুদ্ধিমত্তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে যে কীভাবে এর কাজগুলি সম্পাদন করতে হবে। এক্ষেত্রে সেন্সর এবং অন্যান্য সিস্টেমে এমন কিছু বিষয় থাকে যেগুলি ল্যান্ডারের সিস্টেমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনুসারে কাজ করতে অনুমতি দেয়। চন্দ্রযান-৩-এর ল্য়ান্ডার’বিক্রম’ শুক্রবার বিকেল ৪টের সময় সফলভাবে একটি ডিবুস্টিং কৌশল সম্পন্ন করে। বৃহস্পতিবার প্রোপালশন মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চাঁদের দিকে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে ল্যান্ডারটি।

এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন ইসরো প্রধান কে সিভান জানান, ল্যান্ডারটি যখন কক্ষপথ থেকে তার অবতরণ স্থল বাছাই করবে তখন এটির বেগ থাকবে প্রতি সেকেন্ডে ২ কিলোমিটার। চাঁদের পৃষ্ঠ স্পর্শ করার সময় এই গতি নামিয়ে আনতে হবে শূন্যতে। অর্থাৎ, সেই সময় একেবারে থিতু হবে ল্যান্ডারটি। এই প্রসঙ্গে তিনি এও মনে করিয়ে দেন, ‘গোটা প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’

সঙ্গে এও জানান, ‘ল্যান্ডারটি চন্দ্রপৃষ্ঠ ছোঁয়ার পর চাঁদের ধুলো উড়বে। ধুলো ঝড় শেষ হলে ‘প্রজ্ঞান’ রোভারটি বেরিয়ে আসবে ল্যান্ডারের ভিতর থেকে। একটি শক্তিশালী সিস্টেম তৈরি করতে চন্দ্রযান -২ মিশনের সমস্ত ত্রুটিগুলিকে মাথায় রেখে সেগুলি সংশোধন করা হয়েছে। মহাকাশযানের অবস্থা যাই হোক না কেন সাফল্য় নিশ্চিত। প্রোপালশন, কন্ট্রোল সিস্টেমগুলিকে আপগ্রেড করা হয়েছে। অতিরিক্ত সেন্সর যোগ করা হয়েছে।’

এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন ইসরো প্রধান এও জানান, ‘ছায়াযুক্ত অঞ্চল চাঁদের দক্ষিণ মেরু। এখনও পর্যন্ত এই অঞ্চল অনাবিষ্কৃত। আশা করা হচ্ছে এই অঞ্চলেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নতুন তথ্য় আবিষ্কার হবে। শুধু তাই নয়, ‘নতুন বিজ্ঞান’ শুধুমাত্র ভারতের জন্যই কার্যকর হবে না, অন্যান্য দেশগুলি তাদের নিজস্ব পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই তথ্য ব্যবহার করতে পারবে। উপকৃত হবে গোটা বিশ্ব।’

এদিকে ইসরো সূত্রে খবর, প্রোপালশন মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরপরই বিক্রম ল্যান্ডারে থাকা ক্যামেরা ছবি তোলে চাঁদের পৃষ্ঠের। ছবিগুলিতে চাঁদের পৃষ্ঠে বড় বড় গর্ত স্পষ্ট। ‘বিক্রম’ ল্যান্ডারের সব সিস্টেমগুলি এখনও পর্যন্ত সঠিক ভাবে কাজ করছে।

একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, আগামী বুধবার ২৩ অগাস্ট ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চাঁদে অবতরণ করার পরে, রোভারটি চাঁদের পৃষ্ঠের গঠন এবং উপাদান সম্বন্ধীয় তথ্য সংগ্রহ করবে, বিস্তৃত গবেষণার পথ প্রশস্ত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − 5 =