যাদবপুরে ছাত্র মৃত্য়ুর ঘটনা ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। কারণ, হস্টেল থেকে পাওয়া একটি ডায়েরির এক পাতা জুড়ে যে চিঠি উদ্ধার হয়েছিল তা আদতে নদিয়ার ওই ছাত্র লিখেছিলেন কি না তা নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। তবে চিঠির বয়ান এবং তারিখ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছিলই। তবে সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে আদতে ওই চিঠি লিখেছিলেন হস্টেলের এক সিনিয়র দাদা-ই।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, ডিনকে ওই চিঠি লিখতে জোর করা হয়েছিল নদিয়ার ওই ছাত্রকে। এরপর সেই চিঠির বয়ান হস্টেলের ‘সিনিয়র দাদা’রা লিখে দিয়েছিলেন বলেও সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। মৃত ছাত্রকে সিনিয়রদের বয়ানেই সই করতে বাধ্য করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই কথা সত্য়ি হলে, মৃত ছাত্রকে দিয়ে সই করিয়ে নিয়ে ওই চিঠি লেখা হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
ওই ছাত্র যে দিন মারা যায়, সে দিন রাতে ডিনকে ফোন করেছিলেন এক সিনিয়র পড়ুয়া। তিনি ডিনকে যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে চিঠির বয়ানের প্রচুর মিল রয়েছে। যা নিয়ে রহস্য আরও বাড়ে। এমনকি হস্টেলের একটি সূত্রের দাবি, আগামী দিনে ওই চিঠি ডিনকে জমা দেওয়া হবে বলেই ১০ তারিখ দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে মৃতের বাবা দাবি করেছেন, ওই চিঠি তাঁর ছেলের লেখা নয়। চিঠিতে থাকা মৃত ছাত্রের দুটি স্বাক্ষরেও অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এখানে আর একটা প্রশ্ন উঠেছিল একটা চিঠিতে দু’বার সই কেন রয়েছে মৃত ছাত্রের তা নিয়েই।
এদিকে এই চিঠির সঙ্গে ক্যাম্পাসের রাজনীতি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ওই ছাত্র কি ব়্যাগিংয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক লড়াইয়ের শিকার হল, সেই প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে। কারণ যে হস্টেলে মৃত ছাত্র থাকত সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন সংগঠনগুলির দাপট বেশি। চিঠিতে যে ছাত্রের নাম রয়েছে, তিনি অন্য একটি বাম সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি হস্টেলের আবাসিকও নন ওই ছাত্র। তদন্তের অভিযোগ ঘোরাতেই এই চিঠি সামনে আনা হল কি না, সে প্রশ্নও মাথাচাড়া দিচ্ছে। চিঠির সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য ইতিমধ্যেই জেনেছে পুলিশ। তদন্তে অগ্রগতি হলে চিঠির বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।