তৃতীয় টেস্টের তিন দিনের শেষে ম্যাচটা যেখানে দাঁড়িয়ে তা একেবারেই ফিফটি-৫০। দুটো টিমের কাউকে এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখার কোনও জায়গা নেই! এখনও পেন্ডুলামের মতো দুলছে টেস্ট। ফলে একটা ভালো বা খারাপ সেশন ঠিক করে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য।
টিম ইন্ডিয়া তৃতীয় দিনে ৩৭৬–৬ থেকে ৩৮৭ অল আউট। আবার ভিলেন সেই লোয়ার অর্ডার। শেষ তিন উইকেটে ইংল্যান্ড করেছিল ১১৬, ভারতের শেষ তিন উইকেটে মাত্র ১১! কিন্তু হেডিংলের মতোই বিপক্ষের ঘাড়ে চাপার সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া ভারতের। তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান বিনা উইকেটে ২। তবে তৃতীয় দিন লর্ডস জুড়ে কেবল লোকেশ রাহুল। এদিন লোকেশ রাহুল এক প্রান্তে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকলেন। ১৭৭ বল ক্রিজে কাটালেন। একশো করার পরই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন তিনি। তার আগে অবশ্য গড়লেন রেকর্ড। লর্ডসে রাহুলের নামের পাশে লেখা দুটো সেঞ্চুরি। লোকেশ রাহুলের ১০০ রানের ইনিংসে ছিল ১৩টি বাউন্ডারি। এই প্রসঙ্গে বলতেই হয়, লোকেশ রাহুল ছাড়া লর্ডসের বাইশ গজে দুটো বা তার বেশি সেঞ্চুরি রয়েছে কেবল দিলীপ ভেঙ্গসরকারের। দিলীপ ভেঙ্গসরকার তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন ক্রিকেটের মহাতীর্থে। সেই কারণেই তাঁকে ‘লর্ড অফ লর্ডস‘ বলা হত। এশিয়ার প্রথম ওপেনার হিসেবে লোকেশ রাহুল লর্ডসে লিখে গেলেন রূপকথা।কোনও এশিয়ান ওপেনার লর্ডসে দুটো সেঞ্চুরি করতে পারেননি।
ভারতের একটা বড়সড় ইনিংস গড়ার ক্ষেত্রে রাহুলকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছিলেন ঋষভ পন্থ। লোকেশ রাহুলের সঙ্গে পন্থ ১৪১ রান জোড়েন।
অত ভালো খেলার পরে লাঞ্চের আগে অত রিস্ক নিয়ে সিঙ্গলটা ঋষভ (৭৪, ১১২ বলে) কেন নিতে গিয়েছিলেন, তিনিই বলতে পারবেন। স্টোকসের ডাইরেক্ট থ্রোতে উইকেট ভাঙল, সেঞ্চুরিও মাঠেই থেকে গেল। তবু ফোলা আঙুল নিয়ে ঋষভের এই ইনিংস মনে রাখতেই হবে। তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল ৮টি চার ও ২টি ছক্কা।
রাহুল ও পন্থ ফিরে যাওয়ার পরে রবীন্দ্র জাদেজা ও নীতীশ কুমার রেড্ডি ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন। জাদেজাকে ব্যাট হাতে ফের সপ্রতিভ দেখাল। চলতি সিরিজে তৃতীয় অর্ধশতরান জাদেজার। তিনি ও নীতীশ রেড্ডি ৭২ রান জোড়েন পার্টনারিশপে। নীতীশ রেড্ডিকে (৩০) স্টোকস ফেরানোর পরে ওয়াশিংটন সুন্দর পার্টনারশিপ গড়েন জাদেজার সঙ্গে। ৫০ রান জোড়েন তাঁরা। ভালো শুরু করেও শেষ সেশনে ৭১ রানে পাঁচ উইকেট। অথচ সকালে রাহুল–ঋষভের শুরুটা ছিল নিখুঁত।
তবে পিচ ঠিক কী আচরণ করবে চতুর্থ দিনে তা জানেন ক্রিকেট দেবতাই। কারণ নার্সারি এন্ড থেকে একটা ক্র্যাক এখনই তৈরি হয়েছে। যেখানে বলটা ফেলে নীতীশকে ফেরান স্টোকস। চতুর্থ দিনে ওই ফাটল আরও বাড়বে। যত ম্যাচ এগোবে, তত উইকেটের আচরণ নিয়ে তৈরি হবে প্রশ্নচিহ্ন।