ই-বর্জ্য কিনতে বহুতল আবাসনে শিবির করবে পুরসভা

শহরজুড়ে দিন দিন বাড়ছে নষ্ট হয়ে যাওয়া ই-বর্জ্যের পরিমাণ। এর জেরে ছড়াচ্ছে নানা রকমের রোগ। বাড়ছে দূষণের মাত্রাও। এই সমস্যা ঠেকাতে অফিস পাড়া এবং শহরের বহুতল আবাসনগুলিতে শিবির করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। এই শিবিরে কেনা হবে ই-বর্জ্য। কারণ, পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই জাতীয় বর্জ্য মাটির সঙ্গে সহজে মেশে না। জলে মিশে জলকেও বিষাক্ত করে তোলে। এতে অনেকে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ায় ইলেকট্রনিক সরঞ্জামে থাকা তামা আগুনে পুড়ে অনেক ক্ষতিকর পদার্থ তৈরি হয়। যা ক্ষতি করে ফুসফুসের।’ তাই এই বর্জ্য পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা খুবই জরুরি, এমনটাই দাবি পরিবেশ বিজ্ঞানীদের।

এদিকে কলকাতা পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে খবর, সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে পুরসভার। এই ই-বর্জ্য পুরসভার কাছ থেকে তারা সংগ্রহ করবে। বিভিন্ন রকমের ই-বর্জ্যের দামও ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের তরফ থেকে। রাজ্য সরকারের ঠিক করে দেওয়া সেই দামেই ই-বর্জ্য কেনা হবে। সংগ্রহের পর এই ই-বর্জ্য তুলে দেওয়া হবে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের হাতে। এরপর ই-বর্জ্য পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে যে সব সংস্থা, তাদের হাতে এই ই-বর্জ্য তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অনেকেই বাড়ির অন্য বর্জ্যের সঙ্গে ই-বর্জ্যও দেদার ফেলে দিচ্ছেন। এর মধ্যে এমন কিছু জিনিস থাকছে, যা অন্য বর্জ্যের সঙ্গে মিশে বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়াচ্ছে। সে কারণেই এগুলির পৃথকীকরণ হওয়া জরুরি। পুরসভা ঠিক করেছে, আপাতত শহরের ১০টি ওয়ার্ডে এই পরিষেবা চালু করা হবে। এরপর ধাপে-ধাপে সব ওয়ার্ডেই চালু হবে এই পরিষেবা। এর পাশাপাশি পুরসভা এই উদ্যোগের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে জানাতে প্রচার করবে। কেন বর্জ্য পৃথকীকরণ জরুরি তাও এই প্রচারে তুলে ধরা হবে। পুরসভা সূত্রে খবর, এই প্রচারে সামিল করা হবে কাউন্সিলারদেরও। বছরখানেক আগে ই-বর্জ্য সংগ্রহের জন্য শহরের প্রতিটি বরোয় ড্রপ বক্স বসানো হয়েছিল।

তবে, যে ভাবে বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ছে, তাতে শুধু বরোর মধ্যেই বর্জ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছে না পুরসভা। এক পুরকর্তা বক্তব্য, ‘দেশের বড় শহরগুলির মধ্যে ই-বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ার নিরিখে কলকাতা প্রথম সারিতেই রয়েছে। তাই এ নিয়ে পদক্ষেপ করা খুবই জরুরি। সে কারণেই এই উদ্যোগ।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen + three =