কড়েয়ায় প্রোমোটার খুনে নাম জড়াল বিশ্বস্ত সঙ্গীর

শহরের বুকে ফের ভয়াবহ ঘটনা। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হল এক ব্যক্তির দেহ। ঘটনাস্থল কলকাতার কড়েয়া থানা। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় এক যুবকের দেহ। মৃতের নাম সামসের আলি। কড়েয়া থানা এলাকার সামসুল হুদা রোডের কাশিয়াবাগান মাঠ সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ওই ব্যক্তির। তিনি পেশায় ঠিকা কনট্রাক্টর। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা তাঁকে ঘরে ঢুকে খুন করেছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে কড়েয়া থনার পুলিশ। এলাকার সব সিসিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সামসের আলির পরিবার সূত্রে খবর, সামসেরের পরিবার যে বাড়িতে থাকে তারই অদূরে একটি পৃথক বাড়িতে থাকতেন। বৃহস্পতিবার রাতে আলাদা বাড়িটিতে একা ছিলেন সামসের আলি। এরপর শুক্রবার সকালে তাঁর কোনও সাড়া না পেয়ে খোঁজ করতে যান তাঁরা স্ত্রী। ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, বাইরে থেকে তালা দেওয়া। তা দেখেই সন্দেহ হয় তাঁর। এরপর লোকজন ডেকে দরজা ভাঙা হলে ভিতরে প্রবেশ করে চমকে যান সবাই। বাড়ির ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে সামসেরের দেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কড়েয়া থানার পুলিশ ও হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা।

তদন্তে নেমে পুলিশ আধিকারিকেরা দেখতে পান সামশেরের বাইক উধাও। সেটির খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। সঙ্গে এও জানতে পারেন, যে বাড়িতে থাকতেন সামশের আলি তাঁর সঙ্গেই থাকতেন রাহুল। তিনি অসমের বাসিন্দা। বছর দেড়েক আগে রাহুল কলকাতায় আসে। তাকে নিজের কাছে রেখে কাজে বহাল করেন সামশের। অফিসের একটি চাবি থেকে শুরু করে স্কুটি, নিজের মোবাইল ‘বিশ্বস্ত’ রাহুলের কাছেই রাখতেন সামশের। মাঝেমধ্যে রাহুল কাছেই একটি ক্লাবে ঘুমাত। কখনও বা অফিসে। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা পর্যন্ত এলাকায় গল্পগুজব করেন সামশের। দুটো পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এর পর তিনি অফিসে ঘুমোতে চলে যান।

এদিকে পুলিশ ও ফরেনসিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর মাথায় চপার দিয়ে অসম্ভব জোরে আঘাত করেছে খুনি। আঘাত এতটাই জোরে যে মাথা থেকে ঘিলুর প্রায় পুরো অংশই ছিটকে গিয়ে পড়েছে বালিশ ও বিছানায়। খুলির ভিতর ‘গ্রে ম‌্যাটার’ প্রায় অবশিষ্ট ছিল না বললেই চলে। তবে খুনের পর চপারটি ফেলেই সে চলে যায়। সেটি উদ্ধার হয়েছে। খুনের আগে ঘরের সিসি ক্যামেরার উপর কাপড় ঢেকে দেয় খুনি। তাই খুনের ফুটেজ পাওয়া যায়নি। আশপাশের দুটি বাড়িতে সিসিটিভি ক‌্যামেরা রয়েছে। সেগুলির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। রাহুলই এই ঘটনায় জড়িত বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। তদন্তকারীদের ধারণা, রাতে রাহুল তাঁর সঙ্গে ছিল। ভোররাতে ঘুমের মধ্যেই তাঁকে খুন করে স্কুটি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় রাহুল। তার খোঁজে চলছে তল্লাশি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − four =