যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে নোটিশ পাঠানো হল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে। ১০ অগাস্ট, র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন মৃত ছাত্রের পরিবার। এবার সোমবার এই ঘটনার বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পদক্ষেপ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের মতে, ওই তরুণ ছাত্রের মৃত্যুর পিছনে কলেজ প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং নজরদারির অভাব রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর, পুলিশ জানিয়েছে, লাগাতার ব়্যাগিংয়ের কারণে আতঙ্ক বাসা বেঁধেছিল ওই ছাত্রের মনে। এর ফলেই সম্ভবত হোস্টেলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় তার। এরই প্রেক্ষিতে কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত ছাত্রের সহপাঠীরা বিষয়টি ডিনের নজরে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের চেষ্টা কাজে আসেনি। কমিশন আরও বলেছে, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যদি সত্যি হয়, তাহলে বলতেই হবে ওই শিক্ষার্থীর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।
এদিনের পাঠানো নোটিশের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে একটি রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছ মানবাধিকার কমিশন। ইউজিসির বিধান মেনে র্যাগিং প্রতিরোধে কেন পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করেনি বিশ্ববিদ্যালয়, তাও জানাতে হবে ওই রিপোর্টে। র্যাগিং-এর যারা প্ররোচনা দেয়, যারা ব়্যাগিংয়ের সমর্থন এবং যারা অপরাধী, তাদের শাস্তি দিতে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে কিংবা কী কী পদক্ষেপ করার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্ববদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, তাও জানাতে হবে।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন জানিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়েজ মেইন হোস্টেলে স্নাতক প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি যৌন হেনস্থা থেকে শিশুদের রক্ষা আইন বা পকসো-র ধারায় তদন্ত করা হবে। কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চট্টোপাধ্যায় চক্রবর্তী জানান, ওই ছাত্রের পরিচয় গোপন রাখতে হবে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন প্রাক্তন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পালা চুকে গেলেও, তারা দীর্ঘদিন ধরে হোস্টেলেই ঘাঁটি গেঁড়ে ছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি অভিযোগ করেছেন, ওই ছাত্রের মৃত্যুর জন্য ‘কয়েকজন সিনিয়রের’ ব়্যাগিংই দায়ী।