আতঙ্কের নাম কনজাংটিভাইটিস। বঙ্গ জুড়ে বিরাট এক অংশ আক্রান্ত এই কনজাংটিভাইটিসে। কনজাংটিভাইটিস আদতে চোখের ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। সাধারণভাবে প্রচলিত কথা ‘চোখ ওঠা’ বলতে চোখ লাল হওয়া বুঝানো হয়ে থাকে। কিন্তু চোখ লাল হওয়া একটি উপসর্গ মাত্র।
চোখে লালচে ভাব, জ্বালাভাব, চোখ দিয়ে জল পড়া, চোখে ব্যথার সঙ্গে ইচিং সেনসেশন, এই ধরনের একাধিক উপসর্গ দেখা দেয় কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কনজাংটিভাইটিস হলে চোখ লাল হয়ে ফুলে যায়, তার সঙ্গে যন্ত্রণা, চোখ দিয়ে জলও পড়তে পারে। সময়মতো এই রোগের যত্ন না নিলে এখান থেকে চোখের কর্নিয়ারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ছোট থেকে বড় যে কেউ কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগ মূলত ছোঁয়াচে। অর্থাৎ আপনার থেকে আপনার বাচ্চার মধ্যে ছড়াতে পারে এই রোগের জীবাণু। আবার আপনার বাচ্চা স্কুলে গেলে, মাঠে খেলতে সেখানেও এই কনজাংটিভাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হলে আপনাকে বিশেষ কিছু সতর্কতা মানতে হবে। এতে এই রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়বে না। পাশাপাশি আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
তবে এবছর একটি নতুন স্টেন এসেছে। এই রোগের যার জন্য চোখ খুব লাল হয়ে যাচ্ছে এবং চোখের মধ্যে যেন জল জমে ফুলে উঠেছে। এ বছর প্রকোপটা এতটাই বেড়েছে যে মানুষ ভীত হয়ে পড়ছেন। তবে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। এই রোগ মূলত ৫-৬ দিন থাকার পর নিজে নিজেই সেরে যায়। তবে এই সময় নিজের গামছা বা কাপড় অন্যদেরকে ব্যবহার করতে দেবেন না।
এছাড়াও ঘন ঘন চোখে হাত দেবেন না। এতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
শুধুমাত্র চোখে ওষুধ দেওয়ার সময় চোখে হাত দিন।
পাশাপাশি চোখে হাত দেওয়ার আগে হাত ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে সহজেই কনজাংটিভাইটিস থেকে সেরে উঠবেন।
এই সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সব জায়গায় বজায় রাখতে হবে। অর্থাৎ রোগী যে সব জিনিস ব্যবহার করে, যেমন গামছা, তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, জামাকাপড়, চশমা ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। পাশাপাশি এগুলোয় হাতও দেবেন না। এসব জিনিস থেকেও রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দূষণের থেকে দূরে থাকুন। এসময় চোখের যত্ন নেওয়া জরুরি। ধুলোবালি থেকে দূরে থাকাই ভাল। এসব থেকে বাঁচতে চশমা ব্যবহার করতে পারেন।
কোনভাবেই পুকুরে স্নান করা যাবে না। কারণ ওই পুকুরে এই রোগে আক্রান্ত যদি স্নান করে তাহলে সেটি অন্য কাউকে সেই জল লাগলে তিনিও আক্রান্ত হতে পারে। রোগটি অতন্ত ছোঁয়াচে রোগ যতটা নিজেকে আলাদা রাখা যায় ততটাই ভাল! যদি আপনারা কোন ভাবে আক্রান্ত হন (বিশেষ করে শিশুরা) তাহলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।