‘চাকরির জন্য টাকা দেওয়া আর মায়ের শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া একই বিষয়।’ দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই ফিরহাদের গলায় শোনা গেল এমনই অনুশোচনার সুর। অর্থাৎ চাকরি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ঠিক কতটা গুরুতর অপরাধ, সোমবার সেটাই ধরা পড়ল তাঁর বক্তব্যে। পাশাপাশি এটাও স্পষ্ট করে দেন, চাকরিতে দুর্নীতি, দল কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না।
ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জালে দলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী বিধায়ক, এমনকি সরকারি আমলারাও। সোমবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই ফিরহাদ বলেন, ‘আমরা তৃণমূল কংগ্রেস একটা সংসার। কিছু মানুষ নিশ্চিত ভাবে অন্যায় করেছেন। দুর্নীতি জড়িয়ে পড়েছেন। কিন্তু তা বলে আমরা সবাই নই।’ এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান, ‘স্বীকার করতে বাধা নেই. দলের একাংশ দুর্নীতি করেছে।’ তবে এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে ক্লিনচিটও দেন তিনি। এই প্রসঙ্গে ফিরহাদকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বাড়িতেই সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। তবে চেতলার বুকে কোনও মানুষ দাঁড়িয়ে আজ বলতে পারবে, ফিরহাদ হাকিম কোনও দুর্নীতি করেছেন? ২৫ বছরে কোনও কাউন্সিলর, কোনও প্রমোটার, কারোর কাছ থেকে হাত পেতে একটা পয়সা নিয়েছেন?’
এরই পাশাপাশি এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় সম্পর্কে বলতে গিয়ে ফিরহাদ জানান, ‘আমি রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের থেকেও ওপরে দেখি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।’
প্রসঙ্গত, বর্ষশেষেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘সান্তা ক্লোজ’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, সারাবছর নানা সামাজিক প্রকল্প দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মানুষের পাশে থাকেন। এবার তাঁকে রামকৃষ্ণের ওপরে স্থান দিলেন। আর তাঁর এই বক্তব্য থেকে এটাও স্পষ্ট যে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের চোখে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রী রামকৃষ্ণ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিবেকানন্দ হলেও কুণালের সঙ্গে একমত হতে পারলেন না পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।