‘রায় বিপক্ষে গেলেই পাল্টা মামলা। রাজ্য সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে সুপ্রিম কোর্টে।’ রামনবমীর অশান্তি মামলা নিয়ে ঠিক এই ভাষাতেই কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য। প্রসঙ্গত, সোমবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চের রাম নবমীর মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে রাজ্যের এই পদক্ষেপ। আর এই ঘটনাতে নিঃসন্দেহে বেশ অস্বস্তিতে রাজ্য।
রামনবমীর অশান্তি নিয়ে এনআইএ-এর করা মামলায় রাজ্যের আচরণে বিরক্ত কলকাতা হাইকোর্ট। বস্তুত সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি মামলার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। সেখানেও রায় পক্ষে না গেলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। রাজ্যের একাধিক মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এই বিষয়টি নজর এড়ায়নি কলকাতা হাইকোর্টের।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের তরফে গত সোমবারই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, রামনবমীতে অশান্তির ঘটনায় তদন্তভার থাকবে এনআইএ-এর হাতে। শীর্ষ আদালতের রাজ্যের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল থাকে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই অখুশি হয় রাজ্য সরকার। দ্বিতীয়ত শীর্ষ আদালত স্পষ্ট বলে দেয়, তদন্তের ক্ষেত্রে সমস্ত নথি রাজ্য পুলিশকে এনআইএ-এর হাতে তুলে দিতে হবে। এদিকে এনআই-এর অভিযোগ, রাজ্যের তরফে কোনও নথিই তাঁরা হাতে পাননি। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এনআইএ-র তদন্তকারীরা। এদিকে, আবার সোমবারই রামনবমীর অশান্তির ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এনআইএ তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসেই মামলা চেয়ে অনুমতি চায়। কিন্তু সেই আর্জিতে কোথাও উল্লেখ ছিল না যে শীর্ষ আদালত ইতিমধ্যেই এনআইএ-এর হাতে তদন্তভার রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
কেন্দ্রের তরফ থেকে আইনজীবী সওয়াল করেন, ইতিমধ্যেই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি হয়েছে। কিন্তু যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে, এটি তাঁর এক্তিয়ার বহির্ভূত বলে মামলা ছেড়ে দেন। বিষয়টি জানার পরই বিরক্ত হন বিচারপতি সেনগুপ্ত। এরপরই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘আপনারা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে একটা নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। তার পর শীর্ষ আদালতের নির্দেশ পক্ষে না গেলে নতুন মামলা করছেন। এটা হতে পারে না।’