নবনির্বাচিত দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত অব্যাহত

নবনির্বাচিত দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত অব্যাহত। এই সংঘাতের মাঝে রাজভবনে সদ্য জয়ী বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠানো হয় বলেই খবর। এদিকে ভগবানগোলার জয়ী প্রার্থী রেয়াত হোসেন সরকারের দাবি, তিনি আমন্ত্রণপত্র পাননি। উল্টোদিকে সায়ন্তিকা জানান, আমন্ত্রণপত্র পেলেও রাজভবনে যাচ্ছেন না। সঙ্গে এও জানান, ‘উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণত স্পিকার কিংবা ডেপুটি স্পিকারকে শপথের দায়িত্ব দেন রাজ্যপাল। তবে এবার তা করেননি রাজ্যপাল। বিধানসভাকে কার্যত অন্ধকারে রেখে সরাসরি আমাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ভগবানগোলার বিধায়ককে চিঠি পাঠানো হয়নি। আমি একা যাব না।’ এরই পাশাপাশি ভগবানগোলার জয়ী প্রার্থী রেয়াত হোসেন সরকার জানান, ‘বিধানসভার বিষয়ে স্পিকার যা বলবেন। তা-ই করব।’ এরই পাশাপাশি রাজভবনে পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে সায়ন্তিকা জানান, ‘বিধানসভার সদস্য যখন আমি। তখন স্পিকার যদি শপথ বাক্য পাঠ করান তাহলে ভাল হয়। আপনি রাজ্যপাল হিসেবে এটা কনসিডার করুন। আমি এলাকার কাজ করতে পারছি না।’ ইতিমধ্যেই সেই চিঠি জমা পড়েছে রাজভবনে। অপরদিকে, স্পিকার বিমান বন্দোপাধ্যায় জানান, ‘এখনও জানি না কে কবে শপথ নিচ্ছেন। কোনও সংবাদ আসেনি। আজ সায়ন্তিকা এসে জানাল আমায় চিঠি দিয়েছে। তবে রাজভবনে উনি যাবেন কি যাবেন না সেটা আমি জানি না। তবে বিধানসভাকে জানানো হয়নি কিছুই।’

উল্লেখ্য, বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলার নির্বাচিত বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকারের শপথ গ্রহণ ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্য-রাজভবনের জটিলতা চলছে। প্রথমে নতুন দুই বিধায়কের শপথের জন্য রাজভবনকে চিঠি পাঠায় বিধানসভার সচিবালয়। তারপরই রাজভবনের পক্ষ থেকে পাল্টা চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয় প্রবীণ মহিলা বিধায়ক-নবীন বিধায়ক কে রয়েছেন সে ব্য়াপারেও। তবে শপথ গ্রহণের সঙ্গে সেই চিঠির কী সম্পর্ক তা বুঝে উঠতে পারেনি বিধানসভার অধ্যক্ষ। এরপর ফের বিধানসভা চিঠি দিয়ে রাজভবনকে দ্রুত শপথ বাক্য পাঠের আবেদন করে। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে সায়ন্তিকা ও রেয়াত হোসেনকে চিঠি পাঠায় রাজভবন। যদিও রেয়াতের দাবি তিনি কোনও চিঠি পাননি। অপরদিকে সায়ন্তিকার বক্তব্য, চিঠিতে কে শপথবাক্য পাঠ করাবেন সে কথা উল্লেখ নেই। রাজভবনের তরফ থেকে পাঠানো চিঠি পেয়েই সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগাযোগ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কেন হঠাৎ আলাদা করে বিধায়কদের চিঠি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া চিঠির বয়ানেও আপত্তি তুলেছে পরিষদীয় দল। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়ের বক্তব্য, ‘চিঠিতে লেখা রয়েছে, রাজ্য়পাল নন, রাজভবন মনোনীত কেউ নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথ পড়াবেন। এটাকে আমরা অসম্মানজনক বলে মনে করছি। এটা রীতি নয়। আর তাছাড়া শপথ নিয়ে স্পিকারের চিঠির কোনও উত্তর না দিয়ে রাজ্যপাল নিজে বিধায়কদের চিঠি লিখলেন কেন, সেই প্রশ্নও থাকছে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight − seven =