মেদিনীপুরের ঘটনায় হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে রাজ্য

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল এআইডিএসও। এরপরই এআইডিএসও নেত্রীদের আটক করে মেদিনীপুর থানার লকআপে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এরপর এই ঘটনার জল গড়ায় হাইকোর্টে। এআইডিএসও নেত্রী সুশ্রীতা সোরেনের সেই মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে রাজ্য।

আদালত সূত্রে খবর, বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ রাজ্যের কাছে জানতে চান, রাত দু’টোর সময় কীভাবে একজন মহিলাকে থানা থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল তা নিয়ে। এ ব্যাপারে রাজ্যের কাছে এই প্রক্রিয়ার কোনও নথি রয়েছে কি না তাও জানতে চান বিচারপতি। উত্তরে রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার পর তাদের ছাড়া হয়েছে। এরপরই বিচারপতি জানান, সন্ধ্যা ৭টা  থেকে ৮টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া যেতো সোখানে রাত ২টো কোনও যুক্তিসঙ্গত সময় নয়।

এই প্রসঙ্গে বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘অনেক সময় রাজনৈতিক বিক্ষোভের ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রতিরোধমূলক আটক আমরা দেখতে পাই। কিন্তু যে সময় থানা থেকে ছাড়া হয়েছে, সেটা কোনও যুক্তিসঙ্গত সময় নয়।’

এরপরই রাজ্যের তরফে সওয়াল করা হয়, আঘাত অনেক গুরুতর বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু ওষুধ দেখুন। দুটি মেডিক্যাল কলেজ থেকেই সাধারণ ব্যথা প্রশমন করার ওষুধ এবং এন্টাসিড দেওয়া হয়েছে। পুড়ে যাওয়ার কোনও উল্লেখ মেডিকেল রিপোর্টে নেই। রাজ্যের তরফে আরও জানানো হয়,  থানার ভেতর যে অত্যাচারের অভিযোগ করা হচ্ছে, তার স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ মেডিক্যাল রিপোর্টে নেই।

এর পাশাপাশি রাজ্য়ের তরফ থেকে এও জানানো হয়, যে পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে সম্প্রদায়কে অসম্মান করার অভিযোগ আনা হচ্ছে তিনিও প্রায় সমগোত্রীয় একটি সম্প্রদায়ভুক্ত। রাজ্যের তরফে আদালতে এটাও বলা হয়,  ‘যদি প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ এবং অনুসন্ধান ছাড়া এই ধরনের অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাহলে এটাই নতুন প্রবণতা হয়ে দাঁড়াবে, কাউকে পুলিশ আটক করলেই সে থানা থেকে বেরিয়ে এসে অভিযোগ করবে যে আমাকে মারা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার আগেই এআইডিএসও-র নিগৃহীত নেত্রীদের তরফে  অভিযোগ করা হয়েছিল, তাঁরা দুটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘুরলেও তাঁদের কোনও ইনজুরি রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছিল না। রাজ্যও এই বিষয়টি এদিন আদালতের হাতিয়ার করে। নিগৃহীতা চার নেত্রীর তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল,  লক আপে তাঁদের হাতে গরম মোম ফেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্রে খবর, রাজ্যের আরও সওয়াল করা বাকি রয়েছে। বিচারপতি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে ১৯ মার্চ। সেদিন ফের সওয়াল করার সুযোগ পাবে রাজ্য।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen + fourteen =

preload imagepreload image