ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলায় এই প্রশ্ন উঠল খোদ কলকাতা হাইকোর্টে। কারণ, বাস্তব ছবি বলছে, এক সময় যে সরকারি স্কুলে বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব পড়াশোনা করেছেন, সেখানে আজ ক্লাসই ভরে না। কোথাও কোথাও শিক্ষক-শিক্ষিকার থেকে পড়ুয়ার সংখ্যা কম, এমনটাই জানান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বিচারপতির বক্তব্য, শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কেউ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এগিয়ে যায়নি।
আাদলত সূত্রে খবর, এসএলএসটি নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার। পরে সেই পোস্ট নিয়ে মামলা হয় শীর্ষ আদালতে। এখনও সেই মামলা বিচারাধীন। শুক্রবার সেই পোস্ট সংক্রান্ত মামলাই ছিল কলকাতা হাইকোর্টে।
এদিন আদালতে এজি জানান, শীর্ষ আদালতের সঙ্গে এই মামলার কোনও সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে, বিচারপতি রাজ্যের কাছে জানতে চান, নিয়োগ কি এখন সম্ভব? এজি-র বক্তব্য, স্কুলগুলির সমস্যা হচ্ছে। তাই যে ২৫ জন মামলা করেছেন, তাঁদের পদগুলো ফাঁকা রেখে বাকি নিয়োগ করা হোক।
এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি বসু রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, ছাত্রদের কথা রাজ্য ভাবে কি না তা নিয়ে। পাশাপাশি প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য প্রতি বছর চাকরি দিতে ইচ্ছুক কি না তা নিয়েও। সরকারি স্কুলের একসময়ের ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিচারপতি বলেন, ‘হিন্দু স্কুল, হেয়ার স্কুলের কী অবস্থা! এগুলো কি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নয়?’ শিক্ষাক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য কেউ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এগিয়ে আসেননি বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি বসু।
এই মামলার শুনানিতেই এক চাকরিপ্রার্থী জানান, কোথায় পোস্টিং হবে, সেটা জানা থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে আছে। এ কথা শুনেই বিচারপতি বসু বলেন, ‘সবাই শিক্ষক হিসেবে কাজ করার জন্য নিয়োগপত্র চাইছেন। কিন্তু কোথায় নিয়োগ হবে? জায়গা কোথায়? এমনও স্কুল আছে, যেখানে ২ জন ছাত্রের জন্য ৪ জন শিক্ষক নিযুক্ত আছেন। প্রায় প্রতিটি জায়গায় অতিরিক্ত শিক্ষক।’ সরকারি স্কুল সম্পর্কে বিচারপতি এদিন এ প্রশ্নও করেন, সরকারি স্কুলের আর আগের মতো অবস্থা আছে কি না তা নিয়েও।