বৃহস্পতিবার সকালে বাগুইআটির যে বাড়ি ভেঙে পড়েছে, তার ‘স্ট্রাকচার’ দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। লোহার কোনও ব্যবহারই নেই আস্ত তিনতলা বাড়িটাতে। ওই তিনতলা বাড়ির অংশ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ধ্রুবজ্যোতি নামে এক কিশোরের। বাড়ির ছাদ ভেঙে সে চাপা পড়ে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। মৃতের আত্মীয়রা জানাচ্ছেন, বাড়িটি তৈরির জন্য অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডলের বাবা প্রয়াত নির্মল কুমার মণ্ডল। ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় তাঁর। জানা গিয়েছে, বাড়িতে লোহার পরিবর্তে কাঠের ব্যবহার করেছিলেন নির্মলবাবু। কিন্তু কাঠের বিকল্প কী করে হয় লোহা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আত্মীয়রা বলছেন, বারবার সবাই নিষেধ করা সত্ত্বেও মানতেন না নির্মলবাবু। কাঠ নিয়ে আসা হয়েছিল ক্যানিং এবং সুন্দরবন থেকে। সেই কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছিল তিন তলা বাড়ি। ১৫ বছর আগে ওই কাঠের বাড়ি তৈরি করার জন্য খরচ হয় তিন লক্ষ টাকা, অর্থাৎ তিন লক্ষ টাকায় তিন তলা বাড়ি তৈরি করে ফেলেন ওই ব্যক্তি। তাতে ছিল না কোনও লোহার বিম।
পাশের অংশ পরবর্তী সময়ে লোহা দিয়ে তৈরি করা হলেও কাঠের অংশও রাখা হয়। এক আত্মীয় বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাড়ি ভেঙে নতুন করে তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন নির্মল কুমার মণ্ডলের স্ত্রী। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল অঘটন। বৃহস্পতিবার দিনভর বৃষ্টির পরই ভেঙে পড়ল কাঠের অংশ। প্রাণ গেল ওই বাড়ির ছোট ছেলের।
বাড়ির ভেঙে পড়া অংশ থেকে বেরিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে কাঠ, প্লাইউড। মনে করা হচ্ছে, বাকারি জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা হয়েছিল ছাদ তৈরির ক্ষেত্রে।
এদিকে সূত্রে খবর, নির্মল মণ্ডলের তিন ছেলে। বড় ছেলে পুরুলিয়ায় থাকেন কর্মসূত্রে। এই বাড়িতে থাকতেন দুই ছেলে ও মা। ছোট ছেলে ধ্রুবজ্যোতি বেশ কিছুদিন ধরে মায়ের সঙ্গে থাকছিল নিচের ঘরে। গতকাল এই ঘটনার পরে ধ্রুবজ্যোতি নিজেই মেজ দাদাকে ফোন করে জানায়, বাড়ি ভেঙে পড়েছে, সে নিচে চাপা পড়ে আছে। পরে তাকে উদ্ধার করা হয় কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় তাকে।