হাইকোর্টে বকেয়া বেতন পাওয়ার আশা দেখলেন শিক্ষক

মাওবাদীদের থেকে প্রাণনাশের ঘনঘন হুমকি আসায় স্কুলে পা রাখার সাহস পাননি পুরুলিয়ার শিক্ষক। যে কারণে প্রায় বছর খানেক বেতন থেকে বঞ্চিত হন শিক্ষক সমন্বয় চৌধুরী। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে একাধিকবার আবেদন জানালেও সুরাহা হয়নি। এরপর উপায় না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হন তিনি। আদালতের হস্তক্ষেপে আশার আলো দেখছেন পুরুলিয়ার গণেশ গোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক।

২০১০ সালের জুলাই মাসে পুরুলিয়ার শিরিসঘোড়া নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলে চাকরি পান মামলাকারী সমন্বয় চৌধুরী। সমস্যার শুরু ২০১২ সালে। অভিযোগ, ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর স্কুল চলাকালীন স্কুলে একদল মাওবাদী প্রবেশ করে। সমন্বয়বাবুকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাঁকে স্পষ্ট জানানো হয়, স্কুলে ঢুকলে মেরে ফেলা হবে। এরপর স্কুল থেকেই বান্দোয়ান থানায় যোগাযোগ করেন ওই শিক্ষক। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। কিন্তু এরপর তিনি স্কুলের গণ্ডি পেরনোর সাহস করেননি। সঙ্গে বদলির জন্যও  আবেদন জানান। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর বদলির আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে অন্য স্কুলে বদলি করা হয়। এদিকে যে সময়ের জন্য স্কুলে যেতে পারেননি, ওই সময়ের বকেয়া বেতন দাবি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে আবেদন জানান সমন্বয় চৌধুরী। তবে সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। এরপর ২০১৯ সালে বাধ্য হয়ে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদনের প্রেক্ষিতে হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর আবেদন শুনে জেলা শিক্ষা সংসদকে একটি সমাধানে পৌঁছনোর নির্দেশ দেন। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশের পরও ওই সময়ের জন্য তাঁকে বকেয়া বেতন দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয় শিক্ষা সংসদ। সম্প্রতি সংসদের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সমন্বয়বাবু। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ওই সময় অনিচ্ছাকৃতভাবেই তিনি স্কুলে উপস্থিত হতে পারেনি। ফলে তাঁর বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জেলা শিক্ষা সংসদকে ছ সপ্তাহের মধ্যে যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 3 =