খুঁটিপুজোর মধ্য দিয়ে শুরু হল একুশের মঞ্চ বাঁধার কাজ

তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে খুঁটিপুজোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেল একুশের মঞ্চ বাঁধার কাজ। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, মূল মঞ্চে ওঠার জন্য এবার আর সিঁড়ির ব্যবহার করা হবে না। সিঁড়ি বাদ দিয়ে র‍্যাম্প করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে মঞ্চের সামনের দিকে এগিয়ে এসে উপস্থিত নেতাকর্মীদের অভিবাদনশুভেচ্ছা জানান ও বক্তৃতা করেন এবার সেই জায়গার পরিধি বাড়ানো হচ্ছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর দিকে। পাশাপাশি বক্তাদের চলাচলের জায়গা রাখা হচ্ছে। কারণ সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর দিকেও হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হয়। তাঁরা মিছিল করে এসে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর ওপরেই বসে পড়েন। তৃণমূল কর্মীসমর্থকআমজনতা যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও ভালভাবে দেখতে পান সেই কারণে একেবারে মঞ্চের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত জায়গা রাখা থাকবে। যাতে তৃণমূল সুপ্রিমো এগিয়ে গিয়ে সকলকে অভিবাদন জানাতে পারেন। আর এই মঞ্চ থেকেই জাতীয় ও রাজ্যস্তরে আগামী দিনে কোন পথে চলবে তৃণমূল কংগ্রেস তার দিশা ২১ জুলাই দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এখনও পর্যন্ত মঞ্চের মাপ যা ঠিক করা হয়েছে তা হল মূল মঞ্চ, যেখানে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দলের শীর্ষস্তরের নেতা, নেত্রী, বিধায়ক, মন্ত্রী, সাংসদ, আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বসবেন সেই মঞ্চের মাপ ৫২x২৪ ফুট। দ্বিতীয় মঞ্চটি ৪৮ ফুটx২৪ ফুট। তৃতীয় মঞ্চটির আয়তন ৪০ ফুটx২৪ ফুট। উচ্চতায় ৩টি মঞ্চ যথাক্রমে ১০, ১১ ও ১২ ফুট।

তবে মনে রাখতেই হবে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই শেষ শহিদ দিবস তৃণমূলের। ফলে এবারের ২১ জুলাইয়ে মেগা চমকের অপেক্ষায় ঘাসফুল শিবিরের সমর্থকরা। তাই আয়োজনও হচ্ছে বিশাল ভাবে। মঙ্গলবার মঞ্চ বাঁধার কাজ খুঁটিপুজোর মাধ্যমে শুরু হবে। দলের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। দিনভর বৃষ্টি এবং নিম্নচাপের চোখরাঙানির ফলে খুঁটি পুজোর আয়োজন নিয়ে চিন্তা রয়েছে দলের। এদিকে, মঞ্চ বাঁধার কাজও বাধা পেতে পারে এই প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে। 

এদিকে ২১ জুলাইয়ের কয়েক দিন আগেই উত্তরবঙ্গ সহ দূরবর্তী জেলা থেকে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা শহরে এসে পৌঁছবেন। কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র থেকে বিধাননগর, নিউ টাউনে এঁদের রাত্রিবাস ও খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হবে।
এর মাঝে কপালে ভাঁজ ফেলছে প্রতিদিন কলকাতায় ভারী বৃষ্টিপাত।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী ৭ দিন দুর্যোগ চলবে বঙ্গে। নিম্নচাপের প্রভাবে ২১ জুলাই কলকাতায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এমত অবস্থায় ২১ জুলাইয়ের জন্য প্রশাসনিক প্রস্তুতিতে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। আর পুলিশের কাছে এখন সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্কিং।  কারণ, কলকাতার চতুর্দিক জলমগ্ন। জল জমে রয়েছে ময়দানেও। এদিকে ওই ময়দানেই  ২১ জুলাইয়ের জন্য শহরে আসা বিশাল সংখ্যক বাসগাড়ি রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শহিদ দিবসের অনেক আগে থেকেই জেলা থেকে সাংগঠনিক প্রতিনিধি দল কলকাতায় এসে পৌঁছয়। ময়দানেই রাখা হয় সেই গাড়ি আর বাস। কিন্তু জল জমে থাকায় সেই নিয়ে কোনও প্রস্তুতি শুরু করতে পারেনি লালবাজার।  পাশাপাশি জল কাদায় ভর্তি ময়দানে এই মুহূর্তে এত সংখ্যক গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে আবার এবারের ২১ জুলাই পড়েছে সোমবারের মতো সপ্তাহের প্রথম কর্মব্যস্ত দিনে। এমনিতেই রাস্তা সচল রাখা নিয়ে কার্যত হিমশিম অবস্থা তৈরি হয়, তার মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্কিং। 

সূত্রে খবর, লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের মাসিক পর্যালোচনা বৈঠকে ২১ জুলাইয়ের পার্কিংয়ের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনাই হয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, বৃষ্টি কমার পর অন্তত ৭২ ঘণ্টা সময় না পেলে ময়দান মাঠের দুর্বিসহ অবস্থার উন্নতি হবে না। সেক্ষেত্রে সপ্তাহের শেষেও যদি আবহাওয়ার উন্নতি না হয়, তবে ২১ জুলাইয়ের আগে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা নিয়ে বেগ পেতে হবে লালবাজারকে, মনে করা হচ্ছে এমনটাই। 

সূত্রের খবর, শিয়ালদার দিকে এপিসি রোড, বড়বাজার, পোস্তা, আশুতোষ মুখার্জি রোড, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোডের মতো রাস্তায় বিকল্প পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত করার কথাও ভাবনা চিন্তা করছে ট্রাফিক পুলিশ। ২১ জুলাইয়ের আগের রাত থেকেই শহরে পণ্যবাহী গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে ট্রাফিকের চাপ কিছুটা কমবে বলেই অনুমান। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − eight =