গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন এক তরণী। আর এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। পরে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে ওই মামলায় আগাম জামিন পান ভাঙড়ের বিধায়ক। এবার নওশাদের বিরুদ্ধে অন্য অভিযোগ এনে ফের আদালতের শরনাপন্ন হতে দেখা গেল ওই তরুণীকে। মঙ্গলবার বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস ও বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। তরুণীর অভিযোগ, নওশাদ আগাম জামিন পেতেই আইএসএফ বিধায়কের সঙ্গীরা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় অশ্লীল ছবি পাঠাচ্ছে এবং অশ্লীল মন্তব্য করছে। আর সেই কারণেই নওশাদের আগাম জামিন খারিজের আবেদন জানান হাইকোর্টে। তরুণীর বক্তব্য, আগাম জামিন পাওয়ার পরই হুমকি হিসেবে ওই ধরনের ছবি ও মন্তব্য করা হয়েছে। এরপরই বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, ওই সব মন্তব্যের পিছনে নওশাদের ভূমিকা রয়েছে, তা কী করে প্রমাণিত হচ্ছে তা নিয়ে। নওশাদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগেই অভিযোগ করা হয়েছিল। এটা রাজনৈতিক প্রতিহংসা। কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, তরুণীর আইনজীবী বলেন, নওশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পরই তাঁর মক্কেল এমন অশ্লীল মেসেজ পাচ্ছেন।
বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস সেইসময় বলেন, আমি ঠিকভাবে গাড়ি চালালেও উল্টোদিক থেকে কেউ মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে ধাক্কা দেবে না, কে বলতে পারে? সমাজে বিভিন্ন মানুষের মনোভাব বিভিন্ন। এরপর ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ওইসব মন্তব্য নওশাদের সঙ্গীরা করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই। আপাতত কারা ওই মন্তব্য করেছে, তা খতিয়ে দেখবে লালবাজারের সাইবার শাখা। ১৬ এপ্রিল ওই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওইদিন রিপোর্ট দেবে লালবাজার।
প্রসঙ্গত, গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় নওশাদের বিরুদ্ধে ওই তরুণী ধর্ষণ ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ করেন। ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে বউবাজার থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়। ঠিক পঞ্চায়েত নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ওই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে। নওশাদ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। এরপর কলকাতা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পান তিনি।