নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের জেরে বাংলায় শিক্ষক নিয়োগ আপাতত বন্ধ। ২০১৪ সালের পর এসএসসি-তে আর কোনও নিয়োগ হয়নি বাংলায়। তাই উপায় না পেয়ে বাংলার ছেলেমেয়েরা এখন চাকরির জন্য যাচ্ছেন বিহারে। ২৯ মে নবম ও দশম শ্রেণির টেট পরীক্ষা ছিল বিহারে। বিহারে পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন বাংলার প্রচুর চাকরিপ্রার্থী। আপাতত পরিসংখ্যান যা বলছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বিহারে নবম ও দশম শ্রেণির টেটে বাংলার প্রার্থীদের সংখ্যা বেশি। আর সেই কারণেই বিহারে টেট পরীক্ষার আগে প্রায় সব হোটেলই বুকড্ । থাকার জায়গার অমিল হওয়ায় পাটনার প্ল্যাটফর্মেই ঠাঁই নিতে হয় বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের।
অথচ কয়েক বছর আগে ছবিটা এমন ছিল না। তখন বিহার থেকে প্রচুর ছেলেমেয়ে বাংলায় পড়াশোনা করতে আসতেন এখানে চাকরি করত। কিন্তু গোটা চিত্রটাই বদলে দিয়েছে শিক্ষক নিয়োগে বিস্তর দুর্নীতি। নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসার পর থেকে প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগও হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক হচ্ছে, বলাই বাহুল্য তা অত্যন্ত শ্লথ গতিতে। কিন্তু বছরের পর বছর চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে বাংলা না হোক, প্রতিবেশী রাজ্যেই একটা সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় পাড়ি দিচ্ছেন তাঁরা।
বিহারে যাঁরা পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই হিন্দি ভাষায় পরীক্ষা দিচ্ছেন। অনেকে আবার উর্দু, ইংরাজিতেও পরীক্ষা দিচ্ছেন। বিহারে পরীক্ষা দিতে যাওয়া চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, ‘বিহারে ভ্যাকান্সি কম। কিন্তু তবুও সেখানে চাকরি পেতেই বাংলার ছাত্রছাত্রীদের ভিড়, বাংলার সরকারের লজ্জার।’
এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা বলতেই হয়, বাম আমলের শেষে নিয়ম করে প্রতি বছর এসএসসি-তে নিয়োগ হত। ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের পর আর কোনও নিয়োগ হয়নি। ২০১৭, ২০২২, ২০২৩ সালে নিয়ম করে প্রাথমিকের টেট হলেও, কোনও নিয়োগ হয়নি। সঙ্গে তো রয়েছে দুর্নীতির কাঁটাও। তৃণমূল জমানায় অনেক বিএড, ডিএলএড কলেজও খুলেছে। হচ্ছে শিক্ষক প্রশিক্ষণও। পাশ করে বেরনো বেকারের সংখ্যা বেড়েছে হু হু করে। কিন্তু চাকরির সংস্থান নেই। যার সবথেকে বড় প্রমাণ পাটনা প্ল্যাটফর্মের ছবি।