মঙ্গলবারের কর্মসূচি ঘিরে একাধিক প্রশ্ন ও আশঙ্কা পুলিশের মনে

পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ব্যানারে ২৭ অগাস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের এই কর্মসূচি ঘিরে একাধিক প্রশ্ন ও আশঙ্কা পুলিশের মনে। এই আহ্বায়করা কি আরজি করের নির্যাতিতার বিচারকেই প্রাধান্য দিচ্ছে নাকি এর পিছনে গভীর কোনও খেলা চলছে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সোমবার নবান্ন অভিযান নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে পুলিশ।

এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার এদিন বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নামে প্রেস কনফারেন্স করে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামে কোনও সংগঠনের অস্তিত্বের কথা আমরা এর আগে শুনিনি। আমরা খোঁজ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেটা দেখলাম, ওদের যে ফেসবুক পেজ সেটায় ফলোয়িং তালিকাটা দেখুন।’

এডিজি দক্ষিণবঙ্গ এর পরই একটি প্রিন্ট আউট দেখান। তাতে দেখা যায়, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে একটি পেজ তিনজনকে ফলো করছে। এরমধ্যে আছে ‘এবিভিপি কলকাতা’, ‘শঙ্কর ঘোষ’ এবং ‘একে আসরাফুল’। সুপ্রতিম সরকারের প্রশ্ন, বারবার এটাকে ছাত্র আন্দোলন বলে চালানো হচ্ছে। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনই যদি হয়, তা হলে কেন এমন দিনে নবান্ন অভিযান হচ্ছে, যেদিন সর্বভারতীয় ইউজিসি নেট পরীক্ষা? হাজার হাজার পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় বসবেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে পরীক্ষা। সাড়ে ১২টা অবধি। আবার বিকাল ৩টে থেকে ৬টা। পুলিশের প্রশ্ন, সুদূর অতীত কিংবা সাম্প্রতিককালে এমন কোনও নিদর্শন নেই, পরীক্ষার দিন ছাত্ররাই আন্দোলনের ডাক দেয়। ফলে এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ভাবাচ্ছে পুলিশকে। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকারের বক্তব্য, তাঁরা জানতে পেরেছেন, এই উদ্যোক্তাদের একজন কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে এক নেতার সঙ্গে মিটিংও করেছেন।

প্রসঙ্গত সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে এর প্রচার চলে। কিন্তু কারা তারা, এতদিন পর্যন্ত কেউ জানতেই পারেনি। ২৩ অগাস্ট হঠাৎই সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিন যুবক। তাঁরা নিজেদের পরিচয় দেন,  রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ে মাস্টার ডিগ্রির ছাত্র প্রবীর দাস, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড পড়ুয়া শুভঙ্কর হালদার ও ম্যাকাউন-এর এমবিএ পড়ুয়া সায়ন লাহিড়ী নামে। এই প্রথম প্রকাশ্যে আসেন তাঁরা।

পুলিশ এদিন জানায়, কোথা থেকে মিছিল আসবে, গাড়ি আসবে, কতজন আসবে, তা জানতে চাওয়া হলেও জানানো হয়নি আহ্বায়কদের তরফে। অথচ রাজ্যের সর্বোচ্চ সচিবালয়ে মিছিল, পুলিশকে এই সমস্ত তথ্য জানাতে আহ্বায়করা বাধ্য। পুলিশ ইতিমধ্যেই এই নবান্ন অভিযানকে বেআইনি ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবারের জন্য সেভাবেই প্রস্তুতি সেরেছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =