বর্ষায় পেটের সমস্যা তো বটেই, এমনকী বর্ষার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চোখও। আর সেই কারণেই প্রয়োজন চোখের যত্ন নেওয়া। চক্ষু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বর্ষার মরসুমে চোখে সাধারণত তিন ধরনের রোগ হতে পারে। ১) কনজাংটিভাইটিস, ২) কর্নিয়া আলসার এবং ৩) অ্যালার্জি।
কনজাংটিভাইটিস এদেশে অতি পরিচিত এক সমস্যা। এতে কনজাংটিভা ফুলে ওঠে এবং চোখ লাল হয়ে যায়। এই রোগ সংক্রামকও, অর্থাৎ একজনের থেকে অন্যজনে ছড়ায়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চলতে হবে। এবং অবশ্যই কন্ট্যাক্ট লেন্স পরা বন্ধ করতে হবে।
কর্নিয়া আলসার হল চোখের কর্নিয়ায় একপ্রকার সংক্রমণ। যাঁরা কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন কিংবা বাগান ও কৃষিকাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রবণতা বেশি। সময়মতো চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নিলে বিপদ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রেও কন্ট্যাক্ট লেন্স পরা বন্ধ করতে হবে।
ধুলোবালি, কসমেটিক্স, এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে অ্যালার্জি হয়ে থাকে। সানগ্লাস পরলে ধুলোবালি থেকে রক্ষা মিলবে। দোকান থেকে সরাসরি স্টেরয়েড বা অ্যান্টিবায়োটিক-স্টেরয়েড আই-ড্রপ নেওয়া খুবই বিপজ্জনক। চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে অবশ্যই পরামর্শ নিতে হবে।
চোখের পাশাপাশি পেটের সমস্যাও বর্ষায় হয়ে থাকে। কলেরা, টাইফয়েড, জন্ডিস ইত্যাদি এদেশে বহুদিনের রোগ।
ফলে বেশ কয়েকটি সাবধানতা অলম্বন করা জরুরি। যেমন,
১. ফুটানো ঠাণ্ডা বা ফিল্টার করা বোতলজাত জল পান করুন।
২. কাঁচা সবজি এড়িয়ে চলুন – ভাজা বা সিদ্ধ সবজি খান।
৩. রাস্তার ফল বিক্রেতাদের কাছ থেকে ফল কেনা এড়িয়ে চলুন।
৪ প্রোবায়োটিক খাদ্য গ্রহণ করুন।
৫. যথেষ্ট জল খান এবং হাত পরিষ্কার রাখুন এবং বাড়িতে রান্না খাবার খান।
৬. টাটকা রান্না খাবার খান।
৭. ফুটোনো ঠাণ্ডা জলে সবজি ভালো করে ধুয়ে নিন।
৮. ঘরে রান্না খাবার সর্বদা ঢাকা রাখুন।
৯. বাচ্চাদের বাইরে থেকে আসার পর হাত ও পা ধুতে বলুন।
১০. বাচ্চাদের চলাফেরার সময় রেলিং ও অন্যান্য উন্মুক্ত জায়গা স্পর্শ করতে বারণ করুন, কারণ কখনও কখনও কিছু মানুষ অজান্তেই রোগের বাহক হয়ে যায় এবং অন্যদের ক্ষতি করতে পারে।
১১. বাচ্চাদের দূষিত জলে সাঁতার কাটতে বারণ করুন।
১২. বাইরের পশুদের স্পর্শ করতে বারণ করুন এবং যদি স্পর্শ করে থাকেন তাহলে হাত ভালো করে ধোয়ার জন্য বলুন।
১৩. খাদ্য পরিবেশক রোগের বাহক কি না যাচাই করুন।