বাদল অধিবেশনের প্রথম দু’দিন কোনও কাজ না হয়েই মুলতুবি হয়ে যায় দুই কক্ষের অধিবেশনই। কারণ সেই মণিপুর। সরকার ও বিরোধী, দু’পক্ষই মণিপুর নিয়ে আলোচনা চায়, কিন্তু ২৬৭ ধারা না কি ১৭৬ ধারা, কীসে হবে আলোচনা, তা নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। বিরোধীদের দাবি, ২৬৭ ধারায় আলোচনা করতে হবে। অর্থাৎ যে ধারায় স্পিকার ও চেয়ারম্যানের অনুমতির মাধ্যমে অন্য সব বিষয় স্থগিত রেখে শুধুমাত্র একটি বিষয় নিয়েই সারা দিন আলোচনা হয়। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার চায়, ১৭৬ ধারায় আলোচনা হোক। সংশ্লিষ্ট ধারায় কেবলমাত্র তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ‘স্বল্পকালীন আলোচনা’ হয় সংসদে। এতে সংসদের সাধারণ কার্যকলাপ বন্ধ রাখারও প্রয়োজন হয় না। তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিরোধীদের দেওয়া এই সংক্রান্ত মোট ৬টি চিঠি খারিজ করে দেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়।
এদিকে শুক্রবার লোকসভার অধিবেশন শুরুর আগে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধিকে দেখা যায় বিরোধী শিবিরের সাংসদদের সঙ্গে কথা বলতে৷ সনিয়ার সঙ্গে বিরোধী সাংসদদের কথোপকথন শেষ হওয়ার পরে লোকসভার অধিবেশন শুরু হওয়া মাত্রই মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দাবি করে ওয়েলে নেমে আসেন বিরোধী সাংসদরা৷ সরকারের তরফে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘মণিপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে গোটা দেশ মর্মাহত, লজ্জিত৷ প্রধানমন্ত্রী নিজে সংসদে দাঁড়িয়ে এই বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন৷ তা সত্বেও আপনার মণিপুর ইস্যুতে আলোচনা করতে চাইছেন না৷ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আলোচনা করুন৷’ কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী পাল্টা বলেন, ‘প্রধানম ৭৮ দিন পরে মণিপুর ইস্যুতে মুখ খুলেছেন৷ তাও সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে৷ অধিবেশন চলাকালীন সংসদে এসে মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাখতে আপত্তি কোথায়?’
শুক্রবার শুরু থেকেই সংসদ ছিল উত্তাল। বিরোধী শিবিরের দাবি, মণিপুর ইস্যুতে সংসদ কক্ষে দাঁড়িয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত না বিবৃতি দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, ততক্ষণ সংসদ চলতে দেওয়া হবে না৷ তবে মোদি মুখ কোলেননি। এদিকে আগামী সপ্তাহে সরকারকে আরও বেশি আক্রমণ করার জন্য ঘুঁটি সাজাচ্ছে ‘টিম ইন্ডিয়া’ যেখানে বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলিকে ক্লাস্টারে ভাগ করে কাজ হবে। প্রতি সপ্তাহে সোম থেকে বৃহস্পতিবারের সংসদে মণিপুরকে হাতিয়ার করে অল আউট আক্রমণে যাবেন বিরোধীরা৷ এই পরিকল্পনার দ্বিতীয় স্তরে থাকছে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতিনিধিদলের প্রস্তাবিত মণিপুর সফর৷