হোম লোন বা গৃহ ঋণ নেওয়ার আগে শতবার ভাবুন

সবারই স্বপ্ন নিজের একটা বাড়ি বানানোর। নিজের বাড়ির প্রতি একটি আলাদা আবেগ ছিল, আছে আর থাকবেও। সেই কারণেই অনেকে চাকরি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমেই বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার দিকে ঝোঁকেন। বিশেষ করে মেট্রো শহরগুলিতে এই প্রবণতা খুব বেশি। পরিসংখ্য়ান বলছে, সম্প্রতি এই প্রবণতা অনেক বেড়েছে। কারণ চাকুরিজীবী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সকলেই হোম লোন পাচ্ছেম খুব সহজেই। এক্ষেত্রে সামান্য কিছু টাকা ডাউন পেমেন্ট করে হোম লোনের ভরসাতেই কিনে ফেলা যায় বাড়ি।

তবে অনেকে আবার বলেন, লোন নিয়ে বাড়ি কেনার চাইতে ভাড়া বাড়িতে থাকা ভালো। তবে যদি আবেগেকে প্রাধান্য দেন, তাহলে নিজের বাড়ির বিকল্প নেই। ভাড়া বাড়িতেও টাকা ভাড়া হিসেবে দিতেই হয়। হোম লোনে ২০-২৫ বছর সেই টাকা দিলেই নিজের বাড়ি হয়ে যাবে। তবে আপনি হোম লোন নেবেন নাকি ভাড়া বাড়িতে থাকবেন, তা নির্ভর করে আপনার আয় ও প্রয়োজন অনুযায়ী।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, ঠিক কত টাকা বেতন হলে কত টাকার লোনের দিকে ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব। এর সরাসরি উত্তর হল লোনের ইএমআই আপনার বেতনের সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হওয়া উচিত বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকা হয়, সেক্ষেত্রে আপনি প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকার ইএমআই নিতে পারেন। তবে সেখানে ইএমআই যদি ২০,০০০ টাকা তা অসঙ্গতি গড়ে দিতে পারে। এই সিদ্ধান্ত আর্থিক ভাবে ভুল বলে প্রমাণিত হতে পারে।

অর্থাৎ অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি বেতনের পরিমাণের মাত্র ২৫ শতাংশ ঋণের ইএমআই হয়, তাহলে অবশ্যই একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনুন। আবার বেতন যদি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে হয় এবং বাড়ির ইএমআই প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকার কম হয়, তাহলে অনায়াসে আপনি একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনা যেতে পারে। তবে প্রত্যেকেরই তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। চাকরি পেয়েই বাড়ি কেনা খুব ভাল সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে। কারণ কর্মক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়েই চাকরির সুবাদে মানুষকে এক শহর থেকে অন্য শহরে স্থানান্তিরত হয়। কিন্তু বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার পর চাকরি পরিবর্তন করার মতো অবস্থা থাকে না। কারণ সেক্ষেত্রে একদিকে লোনের ইএমআই, অন্যদিকে বাড়ি ভাড়াও এসে পড়ে। তাই সিদ্ধান্ত নিন বুঝে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two − 1 =