হাইস্কুলের রাইফেল টিমে যোগ দিতে চেয়েছিল থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। তবে ‘ভয়ঙ্কর খারাপ’ রকমের পারফরম্যান্সের জন্য বাদ পড়ে সে। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টায় অভিযুক্ত, ২০ বছরের থমাসকে নিয়ে এমনই একের পর এক চমকদার তথ্য সামনে আনছে এফবিআই।
থমাসের প্রাক্তন সহপাঠী জেমসন মারফি জানিয়েছেন, ‘স্কুলে শ্যুটিং প্র্যাকটিসের সময়ে থমাস রীতিমতো হাস্যকর কাণ্ড ঘটাত। একবার তো টার্গেটের ২০ ফুট দূর দিয়ে বেরিয়ে গেল ওর গুলি! ও যতবারই চেষ্টা করত, এতই বাজে গুলি চালাত, যে সবাই হেসে ফেলত। শেষে ওকে রাইফেল টিমে নেওয়াই হয়নি। কোচও বুঝতে পারেননি ওকে নিয়ে কী করবেন, তাই ক্লাব থেকে ওকে বার করে দেওয়া হয়।’ তবে স্কুলের শ্যুটিং ক্লাব থেকে বাদ পড়লেও, পরে সে যোগ দেয় বেথেলের স্থানীয় ‘ক্ল্যারিটন স্পোর্টসমেনস ক্লাবে’। সেখানে তার পারফরমেন্স কেমন ছিল, তা অবশ্য জানা যায়নি। ট্রাম্পকে গুলি করার পরেই নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে নিহত মারা যায় ম্যাথিউ।
তবে সঙ্গে এটাও জানা গেছে, ট্রাম্পের সভাস্থল থেকে ১৪০ মিটার দূরের একটি বাড়ির ছাদে হামাগুড়ি দিয়ে উঠে পোজিশন নিয়েছিল সে। তার সঙ্গে ছিল তার বাবার রাইফেল, এআর ১৫। ট্রাম্পের ভাষণ চলাকালীন পরপর তিন রাউন্ড ফায়ার করে সে। একটি গুলি বেরিয়ে যায় ট্রাম্পের কান ছুঁয়ে। অন্য গুলিতে মারা যান বছর ৫০-এর এক নিরীহ ব্যক্তি। জখম হয়েছেন আরও দু’জন।
২০২২ সালে বেথেল পার্ক হাই স্কুল থেকে স্নাতক হওয়া থমাস বরাবরই ট্রাম্প বিরোধী, রিপাবলিকান সমর্থক। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সে বামপন্থী এবং ডেমোক্র্যাটিক রাজনীতিবিদদের জন্য আর্থিক অনুদান দিয়েছিল। তবে সে সবসময়ই খুব শান্ত স্বভাবের বলেই পরিচিত ছিল সবার কাছে। মুখে হাসি লেগে থাকত তার। কখনও কোনও রাজনৈতিক আলোচনা শোনা যায়নি তার মুখে। বরং স্কুলে তাকে বুলি করা হত, বন্ধুরা উত্ত্যক্ত করত। কিন্তু থমাস চুপচাপই থাকত হাসিমুখে। স্কুলে অঙ্কে দারুণ ফল করার জন্য ৫০০ ডলারের ‘স্টার অ্যাওয়ার্ড’ পায় সে। স্কুল শেষ করে একটি নার্সিংহোমে পার্টটাইম কাজও শুরু করে পকেটমানির জন্য। ২০২২ সালে সে একটি বিজ্ঞাপনেও কাজ করে। বিশ্বের বৃহত্তম মানি ম্যানেজার কোম্পানি ব্ল্যাকরক-এর একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিল সে। এ বছরেই ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে প্রথম ভোট দেওয়ার কথা ছিল থমাসের। তার আগেই এই এত বড় কাণ্ড সে কেন ঘটাল, তারই উত্তর হাতড়াচ্ছেন গোয়েন্দারা।