প্রত্যেক লোকসভাতেই এমন কিছু সাংসদ থাকেন যাঁরা লোকসভায় এসে তাঁরা কোনও প্রশ্ন করেন না, কোনও বিতর্কে অংশ নেন না। ১৭তম লোকসভায় ৫৪৩ জন সাংসদের মধ্যে ৯ জন, গত ৫ বছরে সংসদে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। এই তালিকায় রয়েছেন কর্নাটকের চারজন বিজেপি সাংসদ বিএন বাচেগৌড়া, অনন্ত কুমার হেগড়ে, ভি শ্রীনিবাস প্রসাদ, এবং রমেশ জিগাজিনাগি। তালিকায় নাম রয়েছে দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ, শত্রুঘ্ন সিনহার এবং আরও এক অভিনেতা সানি দেওলের। নাম রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীও। এছাড়া এই নয় জনের তালিকায় আছেন, অতুল রাই এবং প্রদান বড়ুয়া। শত্রুঘ্ন সিনহা এবং দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূল সাংসদ, আর অতুল রাই বিএসপি সাংসদ। বাকিরা প্রত্যেকেই বিজেপির সাংসদ।
লোকসভার প্রতিবেদন অনুসারে, তাদের মধ্যে তিনজন কোনও প্রশ্ন করতে বা লিখিত জবাব দেননি। বাকি ছয়জন অবশ্য অন্তত কোনও একটি সংসদীয় অধিকার প্রয়োগ করেছেন। রেকর্ড অনুসারে, জিগাজিনাগি লোকসভায় কোনও কথা তো বলেননি, কোনও প্রশ্ন করা বা লিখিত জবাবও জমা দেননি। কর্নাটকের বাকি তিন সাংসদ কিছু কিছু সংসদীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। জিগাজিনাগির মতো শত্রুঘ্ন সিনহা এবং অতুল রাইয়েরও পাঁচ বছরে সংসদীয় কর্মকাণ্ড শূন্য। ২০২২-এর এপ্রিলে উপনির্বাচনের মাধ্যমে লোকসভায় পা রেখেছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা।
তবে দিব্যেন্দু অধিকারী, বিএন বাচেগৌড়া, প্রদান বড়ুয়া, সানি দেওল, অনন্ত কুমার হেগড়ে এবং ভি শ্রীনিবাস প্রসাদ লোকসভায় মুখে কিছু না বললেও, হয় লিখিত প্রশ্ন জমা দিয়েছেন বা বিতর্ক চলাকালীন লিখিত কোনও উত্তর জমা দিয়েছেন। সানি দেওল কথাও বলেননি, প্রশ্নও করেননি। তবে আলোচনার সময় টেবিলে লিখিত জবাব জমা দিয়েছেন। লোকসভার অধ্যক্ষ তাঁকে লোকসভায় দুবার কথা বলার সুযোগও দিয়েছিলেন কিন্তু, তিনি কোনওবারই মুখ খোলেননি।
তবে এই সাংসদদের উপস্থিতির রেকর্ড কিন্তু বলছে, সংসদের কার্যক্রমে উপস্থিত থাকার বিষয়ে তারা গড়িমসি করেননি। শত্রুঘ্ন সিনহা, অনন্ত কুমার হেগড়ে, জিগাজিনাগি, এবং প্রদান বড়ুয়ার উপস্থিতির হার তো ঈর্ষনীয়, যথাক্রমে ৬৫ শতাংশ, ৬৭ শতাংশ, ৭৪ শতাংশ এবং ৮৫ শতাংশ। ভি শ্রীনিবাস প্রসাদ, বিএন বাচেগৌড়ার উপস্থিতির হার যথাক্রমে ৩২ শতাংশ এবং ৩৯ শতাংশ। অন্যদিকে, অতুল রাই, সানি দেওল এবং দিব্যেন্দু অধিকারীদের উপস্থিতির হার অবশ্য বেশ কম, যথাক্রমে ১ শতাংশ, ১৭ শতাংশ এবং ২৪ শতাংশ। পিআরএস লেজিসলেটিভ রিসার্চের বিশ্লেষণ অনুসারে, ১৭তম লোকসভায় সাংসদের গড় উপস্থিতি ছিল ৭৯ শতাংশ। পুরুষ সাংসদদের গড় উপস্থিতি ছিল ৭৯ শতাংশ, মহিলাদের ৭৭ শতংশ।