প্রতিবাদে সামিল হতে বুধবার আরজি করে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় নির্যাতিতার বাবা, মা ও আত্মীয়দের। মেয়ের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁরাও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। পুরো বিষয়টা যে স্বাভাবিক ছিল না, সে কথা আগেও বলেছেন তাঁরা। বুধবার নির্যাতিতার বাবা যে প্রশ্ন সামনে আনলেন তা বিস্ফোরক বললে কম বলা হবে না। তিনি জানতে চান, শ্মশানের টাকাটা কে দিয়েছিল সে দিন সে ব্য়াপারে। মেয়েকে একরকম বাধ্য হয়েই সে দিন দাহ করতে হয়েছিল বলেও দাবিও করেন তিনি।
তিলোত্তমার জন্য বিচারের দাবিতে বুধবার ফের রাত দখলের কর্মসূচি নেওয়া হয়। আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয় গোটা রাজ্য। সেই প্রতিবাদে অংশ নিতে নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এদিন সন্ধ্যায় তিলোত্তমার পরিবার আরজি করে পৌঁছে যায়। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দেন নির্যাতিতার বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়রা।
ঘটনার দিন রাতে এক রকম জোর করেই নির্যাতিতার দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ তাঁর বাবার। সেদিনের ঘটনার সম্পর্কে বলতে গিয়ে শুরুতেই তিলোত্তমার বাবা বলেন, ‘সেদিন মেডিক্যাল টেস্ট না করেই বলে দিল, আমার মেয়ে সুইসাইড করেছে। তারপর যখন ১২টা ১০ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছলাম, তারপর মেয়ের মুখ দেখতে তিন ঘণ্টা সেমিনার হলের বাইরে বসিয়ে রাখা হল। ওর মা তখন পুলিশের হাতে-পায়ে ধরছে। কেন করা হল এমন বা ময়নাতদন্তে এত দেরি হল কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। সঙ্গে এও জানান, এফআইআর করা হয়েছিল সন্ধ্যায়, অথচ এফআইআর রেজিস্টার হল রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে! এত ডাক্তারবাবু থাকা সত্ত্বেও বলা হয়, আন-ন্যাচারাল ডেথ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সেদিন কেউ তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি বলেও জানান নির্যাতিতার বাবা। সেদিন রাতে কীভাবে তাঁর মেয়ের দেহ নিয়ে যাওয়া হল, সেই বর্ণনাও দেন তিনি। তিনি বলেন, “দেহ রেখে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের ওপর প্রেসার তৈরি করা হয়েছিল। টালা থানায় এক ঘণ্টা বসেছিলাম। তারপর বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাই। বাড়ি গিয়ে দেখি সেখানে ৪০০ পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। তখন আর আমাদের কিছু করার ছিল না দেহ পোড়াতে বাধ্য হই। কিন্তু সেদিন শ্মশানের খরচ কারা দিল, আমরা জানতে পারিনি আজ পর্যন্ত।’ নিজের প্রতি খেদোক্তি করে এও জানান, ‘আমার মেয়ে বোধ হয় বলে গেল, আমার বাপি এই টাকাটাও খরচ করতে পারল না! এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে।’