সফরের সময় গা গুলানো থেকে বাঁচতে

পাহাড়ে হোক বা সমতলে, সড়ক পথে কিংবা আকাশ পথে, সফরের সময় গা গুলোনো, বমি হওয়ার মতো সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। এই তালিকায় পড়েন ছোট হোক বা বড় প্রায় সব বয়সের মানুষই। আবার জল পথে যাত্রা করলে রয়েছে ‘সি সিকনেসের’ সমস্যা।

এদিকে আবার বিমান বা সড়ক পথে সফরের সময় বমি হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। আসলে আমাদের চলাফেরার জন্য প্রয়োজন চোখ, কান ও মস্তিষ্কের সঠিক সমন্বয় সাধন। এই সমন্বয় ব্যাঘাত ঘটলে তখন বমি-বমি ভাব বা গা গুলোনো মতো সমস্যা দেখা যায়। একে বলে ‘মোশন সিকনেস’। আমাদের শরীরে এই সমন্বয় সাধনের কাজ করে ভেস্টিবিউলার সিস্টেম। কোনও কারণে এই সিস্টেমে ছন্দপতন হলে এই ‘মোশন সিকনেসের’ সমস্যা দেখা দেয়। দোদুল্যমান কোনও কিছুতে যাত্রা করলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই রকম সমস্যা এড়াতে কী করবেন?

মোশন সিকনেসের জন্য বাজারে নানা ধরনের ওষুধ রয়েছে। কোনও ওষুধের দোকানে গিয়ে বললেই সেই ওষুধ দিয়ে দেবে। অথবা আপনার পারিবারিক চিকিৎসকের থেকেও ওষুধের নাম জেনে নিতে পারেন। সাধারণত প্রোমেথাজিন থিওক্লেট, প্রোক্লোরপেরাজিন জাতীয় ওষুধ এই সময় দেওয়া হয়।

ওষুধ কাজ করার জন্য অন্তত কিছুটা সময় দিতে হবে। ওষুধ খেয়েই সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে উঠলে হবে না। তারপরেও বমি হলে আরও একটি ওষুধ খেতে পারেন। বমি ভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে হোমিওপ্যাথি ওষুধ রয়েছে, চাইলে সেটাও সঙ্গে রাখতে পারেন। সফর শুরুর খানিকক্ষণ আগে খেয়ে নিন।

লম্বা সফরের সময় ভরা পেট খাওয়া বা খালি পেটে থাকা কোনওটাই ভাল নয়। অবশ্যই ভাজাভুজি বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে যান। হালকা খাবার খান। সফর খুব লম্বা হলে সঙ্গে শুকনো খাবার যেমন – বিস্কুট, ড্রাই ফ্রুটস, চকোলেট, বা মুড়ি রাখতে পারেন।

গাড়িতে উঠলেই যদি বমি হওয়ার ধাত থাকে তবে গাড়িতে বসে মোবাইল দেখা, বই না পড়া ভাল। বরং তার জায়গায় চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন। তাতে সফর কখন কেটে যাবে বুঝতেও পারবেন না।

বমি বমি ভাব এড়াতে মুখে লবঙ্গ রাখতে পারেন বা লেবু পাতা বা কর্পূরের গন্ধ নিতে পারেন। বমির সমস্যা থাকলে সবসময় এসি চালিয়ে না রেখে গাড়ির কাঁচ খোলা রাখুন। বাইরের হাওয়ায় স্বস্তিবোধ হতে পারে। প্রয়োজনে সফরের মাঝে একটু দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিয়ে আবার যাত্রা করুন। তাতে ভাল লাগবে, একঘেয়েমি কাটবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × two =