সামনের বছর অর্থাৎ ২০২৬-এই বিধানসভা নির্বাচন বঙ্গে। তবে তার প্রস্তুতি বোধহয় এখন থেকেই নেওয়া শুরু হয়ে গেল বাংলার শাসক শিবিরে। কারণ, মাঝে একটা মাত্র বছর। রাজনৈতিক দিক থেকে দেখতে গেলে খুব একটা বেশি সময় নয়। অন্যদিকে বঙ্গ বিজেপি তাঁদের শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মধ্য দিয়ে বোঝা হচ্ছে দলের ক্ষমতা। বসে নেই বাম শিবিরও। গত লোকসভা নির্বাচন থেকে তাঁদের যুবরা দলের হাল ফেরানোর চেষ্টায় নেমেছেন। লোকসভায় নির্বাচনের ফল শূন্য হলেও বঙ্গের এ প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে ছুটেও চলেছেন তাঁরা। করছেন জনসংযোগন। এমনই এক প্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা প্রশ্নে কড়া তৃণমূল। কোনও অবস্থায় রেয়াত না করার নীতি নিয়েছে জোড়াফুল শিবিরও। অন্তত, গত একমাসের মধ্যে একগুচ্ছ পদক্ষেপ তারই ইঙ্গিত মিলছে। গত ২০২৪-এর ২৫ নভেম্বর ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তিনটি শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি করে দিয়েছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে এক মাসে শৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান :
১) ২৬ নভেম্বর ২০২৪, মুখপাত্র পদ থেকে বাদ ঋজু দত্ত অরূপ চক্রবর্তী সুদীপ রাহা, কোহিনুর মজুমদার।
২) ২৭ নভেম্বর ২০২৪,ভরতপুরের এমএলএ সংবাদ মাধ্যমের সামনে বেফাঁস মন্তব্য করায় হুমায়ুন কবিরকে শোকজ।৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দেওয়ার নির্দেশ।
৩) ২০ ডিসেম্বর,দলের অধ্যাপক সংগঠনের সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডলকে দল থেকে বহিষ্কার। একই সঙ্গে বহিষ্কার করা হলো দলের শিক্ষক নেতা প্রীতম হালদারকে।
৪) একই দিনে দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নামে টাকা তোলার অভিযোগে বড়বাজারের যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তরুণ তিওয়ারিকে সাসপেন্ড।
৫) মালদহের কাউন্সিলর খুনে অন্যতম অভিযুক্ত নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি যিনি দলের শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দল থেকে বহিষ্কার করা হল ৯ জানুয়ারি ২০২৫
৬) ১০ জানুয়ারি ২০২৫ দল বিরোধী কাজের অভিযোগে দল থেকে সাসপেন্ড করা হল চিকিৎসক শান্তনু সেন এবং আরাবুল ইসলামকে।
এর থেকে স্পষ্ট, দলের ভাবমূর্তি ফেরাতে কড়া বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। যাদের ভাবমূর্তি দলের ভেতরে ও বাইরে ক্ষতিকারক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। ফলে সাংগঠনিক রদবদলের ক্ষেত্রে এর যে প্রভাব থাকবে এটা বোঝাই যাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে, মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, ‘শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি যা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সেটা সকলকে মানতে হবে। আগামী বছর নির্বাচন আসছে। এদিকে দল ক্রমাগত বড় হচ্ছে। প্রশাসনিক কাজ অনেক হচ্ছে। শৃঙ্খলা রক্ষা দরকার। প্রশাসনিক কাজ বহু বেড়েছে। সকলে এক সঙ্গে যাতে সরকারের কাজ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়, তার একটা ভূমিকা থাকে। শৃঙ্খলা রক্ষা থাকলে এই সব কাজ মসৃণ ভাবে হবে।