বর্ষায় সুস্থ থাকতে…….

তীব্র দাবদহের পর বর্ষাকাল মনোরম লাগলেও এই সময়েই দেখা দেয় বিভিন্ন অসুখ। নানা ধরনের ইনফেকশন , অ্যালার্জি , বদহজম , এছাড়া আরও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় মানুষ এই সময়ে ভোগেন। বর্ষাকালে এই সব অসুখের হাত থেকে রক্ষা পেতে মানতে হবে কিছু শর্ত। এইগুলি হল

খাবারে সতর্কতা

বর্ষায় বেশী ভাজাভুজি না খাওয়াই ভাল। কারণ, আর্দ্র আবহাওয়ায় আমাদের হজম ক্ষমতা কমে যায়। বেশি মাছ, মাংস না খেয়ে হালকা, সহজপাচ্য খাবার খাওয়া ভাল। স্বাস্থ্যকর, সুষম ডায়েট মেনে চলা ভালো। কাঁচা শাকসবজি থেকে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই শাকসবজি ভাল করে ধুয়ে রান্না করে তবেই খান। যতই খারাপ লাগুক, বেশি করে নিম, করলার মতো তেতো সবজি খাওয়া জরুরি। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। ঘর-বাড়ি বিশেষ করে বাথরুম সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখুন। আর খাওয়ার আগে ও পরে ভালো করে হাত মুখ ধোবেন।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান

ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান। ভিটামিন সি সাধারণ সর্দি-জ্বর প্রতিরোধ করে। তাই বর্ষার সময় সর্দি-জ্বর এড়াতে বেশি পরিমাণে কমলালেবু, পেয়ারা ও অন্যান্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। এই ভিটামিন শরীরে প্রয়োজন মিনারেল শোষণে সাহায্য করে এবং একই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবেও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল অত্যন্ত উপযোগী। শরীরের টক্সিন দূর করতে ও ওজন কমাতেও সাহায্য করে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল।

গরম পানীয় পান করুন

বাড়িতে ফিরে স্নান করে এক গ্লাস গরম পানীয় পান করতে পারেন। পানীয় হিসেবে স্যুপ, দুধ বা অন্য কিছু পান করুন। স্বাস্থ্যকর গরম পানীয় শরীর উষ্ণ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন জীবাণুর ইনফেকশন থেকে আপনাকে সুরক্ষা যোগাতে সাহায্য করবে। এই সময় চলছে করোনা প্রকোপ। ভাইরাস প্রতিরোধে নিয়মিত উষ্ণ পানীয় পানের অভ্যাস করুন। গরম জলের সঙ্গে নুন দিয়ে গার্গল করলে ভাল। এতে ভাইরাসের জীবাণুকে মেরে ফেলে এবং ফুসফুসে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এছাড়াও বর্ষাকালে সুস্থ থাকতে আদা, গোলমরিচ, মধু, পুদিনা, তুলসী চা ইত্যাদি হার্বাল টি খেতে পারেন। এইসব চায়ে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে।

পর্যাপ্ত জল পান করুন

সুস্থ শরীর পেতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া যে খুব দরকারি, তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু প্রতিদিন ঠিক কতটা জল খাওয়া প্রয়োজন তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। যেমন কম জল খেলে শরীরে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে, তেমন অতিরিক্ত জলপানেও দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। তাই সঠিক পরিমাণ মেনে জল খান। জল শরীর থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই পর্যাপ্ত জল পানের অভ্যাস থাকলে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকা যায় বর্ষাকালে।

রোজ হালকা এক্সারসাইজ করুন

বর্ষায় ঘন ঘন জ্বর নতুন কোনও ব্যাপার নয়। রোজ হালকা এক্সারসাইজ করুন। তাতে শরীর অনেকটাই ফিট থাকবে। রক্ত সঞ্চালন থেকে শুরু করে শরীরের যে কোনও ধরনের ব্যথা বেদনার কষ্ট কমাতে যোগ ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। জিমে যেতে না পারলেও, হালকা এক্সারসাইজ করুন রোজ। আর সবচেয়ে যেটা উচিত মন থেকে দূর করুন চিন্তা। তাহলে আপনি থাকবেন সুন্দর, সতেজ ও সুস্বাস্থের অধিকরী৷ এক্সারসাইজের সুবিধা হল মনের সঙ্গে শরীরের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হতে সাহায্য করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 5 =