সন্দীপের গ্রেফতারিতে আরজি কর কাণ্ডে আশার আলো দেখছে টলিপাড়াও

আরজি কর কাণ্ডে তিলোত্তমার প্রতিবাদ চেয়ে রাজনীতি ভুলে পায়ে পা মিলিয়েছেন সকলেই। তালিকা থেকে বাদ পড়েনি টলিপাড়াও। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট থেকে শুরু করে আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা। সবটাই করেছেন তাঁরা। সোমবার ২ সেপ্টেম্বর সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হতেই আশার আলো দেখছেন সকলে। গত ১৫ দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সন্দীপকে। রোজ নিয়ম করে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিচ্ছেন সন্দীপ। সোমবারও গিয়েছিলেন। এরপরই সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখার হাতে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হলেন সন্দীপ ঘোষ। তিলোত্তমার ধর্ষণ ও খুন মামলায় গ্রেফতার হননি।

তবে এদিন সন্দীপ গ্রেফতার হতেই অনন্যা চট্টোপাধ্য়ায় জানান, ‘একটা পথ অতিক্রম করা গেল। আমরা এক জায়গায় রয়েছি, খবর আসা মাত্রই সকলে হইহই করে উঠেছে। কারণ এতদিন ধরে লাগাতার, এত মানুষ লড়ে যাচ্ছে, তাঁদের কোথাও গিয়ে মনে হচ্ছে যাক, কিছুটা পথ এগোনো গেল। একটা বাধা তো অতিক্রম করা গেল। এবার আমরা বাকিটার অপেক্ষায়। আমার বিশ্বাস আমরা এভাবে ঠিক বিচার পাব।‘

সন্দীপের গ্রেফতারিতে যেন আশার আলো দেখছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও। পরমব্রত অবশ্য জানান, ‘উনি যে গ্রেফতার হয়েছেন, সেটা আর্থিক দুর্নীতির কারণে।  সিবিআই সে বিষয় নিশ্চয়ই তদন্ত করবে। সেটা হওয়াই দরকার। তবে এই মুহূর্তে এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এই কারণেও, ইনিই কিন্তু সেই মানুষটি, যিনি অধ্যক্ষ থাকাকালীন এমন একটা ঘটনা ঘটতে পেরেছে। যিনি দায়িত্বে থাকাকালীন এই ঘটনা ঘটেছে, নিঃসন্দেহে তার একটা শাস্তি প্রাপ্য ছিলই। সেটা কী কী কারণে, সেটা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখা হবে। প্রাথমিকভাবে এই শাস্তিটা কোথাও গিয়ে যে মানুষগুলো বিচার চাইছিলেন, তাঁদের সাময়িক একটা প্রশান্তির প্রলেপ দেবে। এটা প্রয়োজন ছিল। অনেক সময় কী হয় কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে তো অনেক তদন্তই যায়, তার সাফল্যের হার সব সময় খুব একটা আশা ব্যঞ্জক হয় না কিন্তু। এমন অনেক কেস আছে যা আজ অবধি চলছে। তবে এভাবে যে সাধারণ মানুষ বিচার চাই বলে প্রতিনিয়ত রাস্তায় নেমেছে, চাপটা রেখে গিয়েছেন, সেই কারণেও কিছুটা এই কেন্দ্রীয় সংস্থা তৎপর হতে বাধ্য হয়েছে। চাপটা যেমন রাজ্য সরকারের ওপরও ছিল, তাঁদের কোথায় কোথায় গলতি হয়েছে, ভুল হয়েছে, সেটার জবাবদিহি করার ওপর রেখেছে, ঠিক তেমনই দোষীরা বেরিয়ে আসুক, তাদের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতি বেরিয়ে আসুক মানুষ সেগুলোও সমানতালে চেয়ে গিয়েছে। সেটার তো একটা চাপ থাকে। সেই চাপটাও সিবিআই-এর ওপর কাজ করেছে। এটা ভাল জিনিস। তার মানে আন্দোলন করে প্রয়োজনীয় ফলাফল পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষ তাঁদের ক্ষমতা দেখাতে পেরেছে।

ঘটনায় মুখ খুলেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তীও। অনির্বাণ জানান, ‘সবার আমরা আলাদা আলাদা করে নাম না বললেও বরাবরই সবাই, যতজন মানুষ পথে নেমেছেন, সকলেই বলেছেন, বিচার চাই, এই উদ্দেশেই তো। যারা যারা এতে জড়িত ছিল, যতজন জড়িত ছিল, যত মানুষ দোষ করেছে, সে প্রত্যক্ষভাবে হোক কিংবা পরোক্ষভাবে, সকলেই শাস্তি পাক, এটাই তো সকলে দাবি করেছিলেন। সন্দীপ ঘোষ যে নানাভাবে জড়িত সেটা সকলেই বুঝতে পারছিলেন। এবার সিবিআই তার তদন্তে যতটা সময় প্রয়োজন নিয়েছে, অবশেষে একধাপ যে এগোনো গেল তাতে খানিক স্বস্তি তো মিলল। এতে খুশি হওয়া, আনন্দিত হওয়ার তো কিছুই নেই, তবে সকলে যে একটা কিছুর অপেক্ষা করছিল, সেটা যে হয়েছে, শাস্তি যে শুরু হল, সেটাটেই সকলে আশা দেখছে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − seven =