বাজেট ফ্রেন্ডলি বিদেশ ভ্রমণের কথা উঠলে প্রথমেই মনে আসে থাইল্যান্ড বা ব্যাংককের নাম। বিশেষ করে হানিমুনে যাঁরা যেতে চান তাঁদের অনেকের কাছেই ব্যাংকক ভীষণই জনপ্রিয়। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আনন্দ করার পক্ষেও আদর্শ স্থানও এই ব্যাংকক-ই। থাইল্যান্ড বা ব্যাংকক ভ্রমণে যে খুব বেশি খরচ হয় তাও নয়। বাজেট মোটামুটি মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যেই থাকে। তবে সমস্যা ফ্লাইটের টিকিট নিয়ে। ব্যাংককে যেতেই গুনতে হয় বেশ বড় একটা অঙ্ক। শুধু তাই নয়, অনেক সময় ফ্লাইটও বাতিল হয়ে যায়। সিট পাওয়াও বেশ ভাগ্যের ব্যাপার।
তবে যা খবর মিলছে তাতে বিমানের টিকিট নিয়ে এবার টেনশনের পালা শেষ হতে চলেছে। কারণ ভারত থেকে ব্যাংকক পর্যন্ত হাইওয়ে তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কলকাতা এবং ব্যাংকক সড়কপথে যুক্ত হতে চলেছে। প্রায় ৪ বছরের মধ্যে মহাসড়ক তৈরির কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মহাসড়ক একাধিক রাজ্য এবং দেশের মধ্য দিয়ে যাবে। কলকাতা এবং ব্যাংকককে সংযুক্তকারী হাইওয়ে প্রকল্পটি মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের আওতাধীন। এই উন্নত প্রযুক্তির মহাসড়ক পথে যাতায়াত যেমন সুবিধাজনক তেমনই রোমাঞ্চকরও হবে বলে শোনা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক নির্মাণের ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্যে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রেও অনেকটাই সুবিধা যে করে দেবে তা বলাই বাহুল্য। ফ্রি প্রেস জার্নালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহাসড়কের কিছু অংশের কাজ শুরুও হয়ে গেছে। এর পাশাপাশি থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র সংক্রান্ত উপমন্ত্রী বিজাওয়াত ইসরাবকদিও জানিয়েছেন, এখএই প্রকল্পের থাইল্যান্ডের অংশের বেশিরভাগ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে অন্যান্য রুটে সংযোগ দিতে আরও ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে।
জানা গেছে যে, এই মেগা ত্রিপক্ষীয় মহাসড়কটি ব্যাংকক থেকে শুরু হয়ে থাইল্যান্ডের সুখোথাই, মায়ে সোটের মতো শহরগুলির মধ্যে দিয়ে গিয়ে, মায়ানমারের কালেওয়া, মান্দালে, তামু, ইয়াঙ্গুনের মধ্য দিয়ে যাবে। ভারতীয় শহররের মধ্যে কোহিমা, মোরে, শ্রীরামপুর, গুয়াহাটি, কলকাতা এবং শিলিগুড়ির মধ্য দিয়েও যাবে এই মহাসড়ক। এই রাজপথের সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্য ২,৮০০ থেকে ২,৮২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মহাসড়ক সবচেয়ে বেশি পথ অতিক্রম করবে ভারতের মাটিতেই।
এখানে একটা তথ্য দিয়ে রাখা প্রয়োজন। ব্যাংককে মার্চ থেকে জুন মাস বর্ষাকাল। বৃষ্টি চলে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। অন্যদিকে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকে শীতকাল। শীতকাল ব্যাংকক ভ্রমণের সেরা সময়। এই সময়ে এখানে ঠাণ্ডা থাকে এবং সন্ধ্যায় আবহাওয়া বেশ মনোরম।
ব্যাংককের আরও একটা সুবিধা হল, বিশ্বের যে কোনও জায়গা থেকে এখানে সহজেই যাওয়া যায়। অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রধান বিমানবন্দরগুলির সঙ্গে ব্যাংককের সুসংযুক্ত। সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর এবং ডন মুয়াং বিমানবন্দর থেকে ব্যাংকক পৌঁছোনো যায় মাত্র আধ ঘণ্টায়। কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই, প্যারিস, সিডনি এবং ফ্রাঙ্কফুর্টের মতো একাধিক আন্তর্জাতিক শহরের সঙ্গে সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর সংযুক্ত। ব্যাংককের জন্য, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, থাই এয়ারওয়েজ, এয়ার ইন্ডিয়া, জেট এয়ারওয়েজ এবং ইন্ডিগোর মতো ফ্লাইট মেলে মুম্বই, দিল্লি কলকাতা এবং ব্যাঙ্গালোর থেকে। ফলে টিকিট পেলে ব্যাংককে পৌঁছে যাওয়া যায় এক পলকেই।