কলকাতা পুরসভায় অধিবেশন চলাকালীন ধুন্ধুমার। পুরসভার অধিবেশন চলাকালীন হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল ও বিজেপি কাউন্সিলররা। শনিবার কলকাতা পুরসভার প্রস্তাবের উপর আলোচনা চলাকালীনই এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর সামগ্রিক ঘটনা এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং ঘটনায় হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন। তিনি বিবাদমান দু’পক্ষেপ কাউন্সিলরদের থামানোর চেষ্টা করেন। তবে তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এদিকে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এদিন অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বিরোধীদের তরফে কোনও প্রশ্ন করা হয়নি বলে জানান মেয়র। তখন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ও বিজয় ওঝা জানান, প্রশ্ন করে কোনও লাভ হয় না। কারণ কোনও উত্তর পাওয়া যায় না। এই বক্তব্যের পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সূত্রে খবর, এদিন তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসুকে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে ধাক্কা দিতে দেখা যায়। বিজেপি কাউন্সিলরদের তরফেও পালটা ধাক্কা দেওয়া হয়। অন্যান্য কাউন্সিলরা দু’পক্ষকেই থামানোর চেষ্টা করেন। এই ঘটনার পর পুরসভার অধিবেশন থেকে বেরিয়ে সটান নিজের ঘরে চলে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
উল্লেখ্য, বিজেপির সাংবাদিক বৈঠক নিয়ে কয়েকদিন আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কলকাতা পুরসভা। তখনও হাতাহাতি জড়িয়ে পড়েন দু’দলের কাউন্সিলররা।
এই ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি কাউন্সিলররা। ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, ‘আমরা একটা বিতর্ক অংশ নিয়েছিলাম। হঠাৎ করেই উঠে এসে আক্রমণ করা হল। কলকাতা পুরসভায় বিজেপি কাউন্সিলরদের উপর মাসকাবারি হামলা হচ্ছে। বিজেপি কাউন্সিলরদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, কলার ধরে টানা হচ্ছে। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। এদিকে মেয়র, ডেপুটি মেয়র আর চেয়ারম্যান বসে বসে দেখছেন। কলকাতা পুরসভায় কোনও আইনের শাসন নেই। তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু এই আক্রমণ করেছেন। তিনি আগে বিজেপিতে ছিলেন, তারপর তৃণমূলে গিয়েছে। এখন দলীয় নেতৃত্বের কাছে নম্বর বাড়ানোর জন্য এই কাজ করছেন।’
অন্যদিকে বিজেপি কাউন্সিলরদের তরফে তোলা হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘অধিবেশন চলাকালীন কোনও মারামারি হয়নি বা ধাক্কাধাক্কি হয়নি। একটা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল। সবাইকে চোর বলা হচ্ছিল। সজল আমাদের ছোটো ভাই। কেন ওঁকে মারব। ওই পরিস্থিতি উত্যক্ত করার চেষ্টা করছেন। সবাই মিলে যদি ওঁকে মারত, তাহলে কী ও সুস্থ হয়ে ঘুরে বেড়াতে পারত! আমি একাই একশ।’