২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন আসতে বড়জোর আর বছর খানেক। বড়ই স্বল্প সময় হাতে। আর এই স্বল্প সময়েই নিজেদের ঘর গোছাতে রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়েছে সব পক্ষই। আর এই আবহেই ঘাসফুল শিবির সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে বুথ স্তরের কর্মীদের উদ্দেশে জারি কর এক সার্কুলার। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এই সার্কুলার জারি করে জানান,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে কিছু ব্যক্তি ভোটারদের বাড়ি যাচ্ছে। তারা কোথাও মশলা, কোথাও আবার অন্যান্য সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করে পরিবর্তে তাঁদের নাম,ফোন নম্বর ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করছে।
একইসঙ্গে তৃণমূলের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, ঝাড়্গ্রামের বিনপুরে প্রথম এমন একটি ঘটনা নজরে আসে। এর পর তা জানানো হয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। দ্রুত থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়। এরপরেই দলের অন্দরে এই নিয়ে আলোচনা হয়। এরপরই নির্দেশিকা তৈরি করে জেলায় জেলায় পাঠান সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার।
এই সার্কুলারে যা আছে তাতে বেশ অস্বস্তিতে যে রাজ্যের শাসকদল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে এই সার্কুলার নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গেছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কারণ শাসকদলের এই বার্তা থেকে এটাও স্পষ্ট যে একদল ‘কুচক্রী’ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাম, ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করছেন। এর বিনিময়ে ভোটারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কার গুঁড়োর মতো মশলাপাতি এবং অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশ কিছু সামগ্রী।
আর এই প্রসঙ্গে যে সার্কুলার জারি হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে তাতে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে, ‘আপনাদের সকলের অবগতির জন্য জানাই, এনজিও বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে কিছু কুচক্রী ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোথাও মশলা বা কোথাও অন্যান্য সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করার নামে নাম,ফোন নম্বর ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করছেন। এর পিছনে বিশাল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রয়েছে। অবিলম্বে সকলে আপনাদের অঞ্চলে লক্ষ্য রাখুন এবং সর্বস্তরের বুথ কর্মীদের নিয়ে মিটিং করে সকলকে সচেতন ও সতর্ক করুন।’পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কখনও কখনও আপনাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও ঢুকে যাচ্ছে। এদের উদ্দেশ্য সমস্ত অভ্যন্তরীণ খবরাখবর নেওয়া। তাই আপনি এমন গতিবিধি জানার সঙ্গে সঙ্গেই এফআইআর করুন এবং আমাদের জানান।’
সূত্রের খবর গত বৃহস্পতিবার এই নির্দেশিকা পাঠানো হয় সমস্ত জেলা সভাপতিদের কাছে। অবিলম্বে এই বিষয়ে জেলা সংগঠনগুলিকে জোর দিতে বলা হয়েছে। নজরদারির যেন কোনও ফাঁক এলাকাগুলিতে না থাকে সেদিকে জোরদার খেয়াল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেতাদের।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ভুয়ো পরিচয় দিয়ে তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে ইতিমধ্যেই ১৬টি এফআইআর দায়ের হয়েছে রাজ্য জুড়ে।