বঙ্গ সফরের আগে এক্স হ্যান্ডেলে বাংলায় বার্তা দিতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এরই প্রেক্ষিতে মোদির এই বাংলা–প্রেম নিয়েই বিঁধতে দেরি করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন,’বিগত দিনে বাংলায় কথা বলার চেষ্টা করতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।’ পাশাপাশি এ প্রশ্নও তোলেন, তাহলে এবার বাংলায় মোদি বলবেন কি না তা নিয়েও। সঙ্গে কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘বাংলায় কথা বলা তো অন্যায়। এটা বিজেপিই বলছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁদের বিরক্ত করছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে না জানিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দিচ্ছে। এরা ভারতের নাগরিক।’
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে নেমেছে প্রশাসন। একাধিক অনুপ্রবেশকারীকে পুশব্যাক করা হয়েছে সীমান্তে। বাংলাদেশি ধরার নামে বিভিন্ন জায়গায় বাঙালিদের উপর জুলুম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এ ব্যাপারে কলকাতায় মিছিলও করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে এই বিতর্ক উস্কে দিতে দেখা গেল রাজ্যের এক মন্ত্রী শশী পাঁজাকে। দলের তরফে তিনি বলেন,’দিল্লির জয় হিন্দ কলোনিতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অমানবিকতা দেখা গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে মিষ্টির দোকানে বাংলা বোর্ড দেখে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। আপনার দলের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যাঁরা বাংলায় লেখেন, তাঁরা বাংলাদেশি। কেন্দ্রীয় সরকারকে জবাব দিতে হবে। এভাবে বাঙালিদের হেনস্থা করাই আপনার ফরমান।’
দুর্গাপুরের সভায় বাংলাভাষীদের উপর পুলিশি ধরপাকড় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে বলেও জানান শশী। বলেন,’পশ্চিমবঙ্গে আপনাকে স্বাগতম জানাই। এটা কবিগুরুর বাংলা। জাতীয় সংগীত লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বঙ্কিমচন্দ্র লিখেছিলেন রাষ্ট্রগীত। বাঙালিদের উপরে আক্রমণে নীরব থাকলে হবে না।’ এরই প্রেক্ষিতে কেন বাঙালিদের উপর অত্যাচার হচ্ছে তার জবাবও প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ভিন রাজ্যে বাংলাভাষীদের নিয়ে বিতর্কের মাঝেই বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেলে বাংলায় বার্তা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের অপশাসনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষ অনেক আশা নিয়ে বিজেপি‘র দিকে তাকিয়ে আছেন এবং তাঁরা নিশ্চিত যে একমাত্র বিজেপি–ই পারবে উন্নয়ন করতে।‘
ভোটের আগে বাংলাভাষী নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। তৃণমূলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে অস্বাভাবিক ভোটার বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তাঁরও দাবি,’দেশের গড়ের চেয়ে বেশি জনসংখ্যা বেড়েছে রাজ্যের একাধিক জেলায়। রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলমানদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে এ দেশে।’
তবে এদিনমন্ত্রী শশী পাঁজার সাংবাদিক বৈঠকে দেখা যায় টেবিলে রাখা শিঙাড়া–জিলিপি। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবেই শিঙাড়া–জিলিপি রেখেছেন বলে দাবি করলেন শশী। তাঁর কথায়,’এট়া প্রতিবাদ। আমরা সকলে মিলে খাব। ডায়াবেটিস থাকলে জিলিপি খাবেন না। ওরা শুধু ভোট নেবে, তাই নয় জীবনটাই কব্জা করতে চাইছে। তাই প্রতিবাদ হিসেবে শিঙাড়া–জিলিপি খাওয়াচ্ছি।’